টানা ৪৮ দিন পর আজ রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাবে বিএনপি। মহান বিজয় দিবসে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি করবে তারা। র্যালিকে ঘিরে ইতিমধ্যে নানা ধরনের প্রস্তুতিও সম্পূর্ণ করেছে দলটি। নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পরিকল্পনা। পাশাপাশি দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দেয়া হয়েছে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা। কারণ এবার দলটি গ্রেপ্তার এড়িয়ে এই কর্মসূচি সফল করতে চায়। আর র্যালিতে সর্বোচ্চ নেতাকর্মীর জমায়েত ঘটিয়ে ঢাকায় নিজেদের শক্তিও প্রদর্শন করতে চায়। আত্মগোপনে থাকা দলের নেতাকর্মীরাও এ কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। এর মধ্যদিয়ে দলটি সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের নতুন বার্তা দিতে চাচ্ছে এবং রাজপথে নামার চূড়ান্ত প্রস্তুতিও সম্পন্ন করতে চায়। আর এখান থেকেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
দুপুর ১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি’র যৌথ উদ্যোগে এই বিজয় র্যালি বের করবে দলটি।
র্যালিটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে মগবাজারে গিয়ে শেষ হবে। র্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন দলটির সিনিয়র নেতারা। এরআগে সকাল ৭টায় বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন বিএনপি’র সিনিয়র নেতারা। পরে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্টে জিয়াউর রহমানের করবে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠের আয়োজন করা হয়েছে।
গত বুধবার বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কার্যালয়ে যান। এদিন র্যালির বিষয়ে অবহিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে একটি চিঠি দেয় বিএনপি। পরে শুক্রবার রাতে মতিঝিল জোনের ডিসি মো. আহাদ মৌখিক অনুমতির বিষয়টি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীকে জানান। এ তথ্য জানিয়েছেন বিএনপি সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু। তিনি বলেন, সকালে মহান বিজয় দিবসে বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন বিএনপি নেতারা। সেখান থেকে ফিরে বিজয় র্যালিতে অংশ নেবেন তারা। শনিবার দুপুর একটায় নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থেকে বিজয় র্যালি শুরু হয়ে মগবাজারে গিয়ে শেষ হবে।
ঢাকা মহানগরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, র্যালির সার্বিক প্রস্তুতি ইতিমধ্যে তারা সম্পূর্ণ করেছে। মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে র্যালির বার্তা দেয়া হয়েছে। প্রতিটি নেতাকর্মীকে মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠানো হয়েছে। আর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তারা সরাসরি একসঙ্গে বসতে না পারলেও ভার্চ্যুয়ালি গ্রুপে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে দলটির শীর্ষ নেতারা র্যালিতে সর্বোচ্চ কর্মী নিয়ে ওয়ার্ড ও থানার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দিয়েছেন।
মহানগরের এক শীর্ষ নেতা বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও মহান বিজয় দিবসে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালির আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। র্যালির জন্য ব্যানার এবং ফেস্টুনও ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। আর নেতাকর্মীদেরকে ঢাকঢোল ও সাজসজ্জা নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্যও বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপি’র অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকেও একই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এটা বিজয় দিবসের র্যালি। শনিবার দুপুর ১টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি বের হবে। র্যালিটি মগবাজারে গিয়ে শেষ হবে। আমি বিএনপি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণসহ দলের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের র্যালিতে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
গত ২৮শে অক্টোবর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করে বিএনপি। ওইদিন বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এরপর থেকেই কার্যালয়ের সামনে পুলিশ অবস্থান করছে এবং ৪৮ দিন ধরে কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে।
আরো পড়ুন : এই দিনে অর্জিত হয় বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়