বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির উদ্যোগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল ১৯ আগস্ট ২০২৩ তারিখ শনিবার বিকাল ০৩.৩০ ঘটিকায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ উপনেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বেগম মতিয়া চৌধুরী, এমপি।
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি, জনাব সাজ্জাদুল হাসান, এমপি এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির মহাসচিব প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মিজানুল হক কাজল অনুষ্ঠানের শুরুতে সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
আলোচনা সভার মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু গবেষক জনাব সুভাষ সিংহ রায়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর ৩২ বছরের সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনে দেশকে অসাম্প্রদায়িক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রে সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। তবু এখনো বিকৃত ও ভুল ইতিহাস রয়ে গেছে যার সুযোগ নিতে যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ উপনেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বেগম মতিয়া চৌধুরী, এমপি তাঁর সংগ্রামী জীবনে বঙ্গবন্ধুর লালিত আদর্শ ও অনুপ্রেরণাদায়ী বিভিন্ন স্মৃতিচারণা করেন। তিনি বলেন, খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে নিশংসভাবে হত্যা করেছে এবং বর্তমানেও তাদের মত কিছু কুলাঙ্গার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বিভিন্নভাবে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ঘাতকদের হত্যার কারণে বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা নিজে দেখে যেতে পারেননি কিন্তু তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সে কাজ দৃঢ়ভাবে করে যাচ্ছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো বাস্তবায়নে যথেষ্ট সফলতা অর্জন করে দেখিয়েছেন। তিনি অনুরোধ করেন দেশবাসীকে এই বিশাল উন্নয়ন কর্মে জননেত্রীর সাথে একাত্ম হতে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণপ্রজাতস্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম বলেন, স্বাধীকার আন্দোলন ও রাষ্ট্র পরিচালনায় জাতির পিতার অতুলনীয় এবং একক ভূমিকা বিস্তৃত পরিসরে অনুধাবন ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণে ধারাবাহিক স্বাধিকার আন্দোলনের পথ ধরে এদেশ স্বাধীন হয়, যা শুধু ঘোষণা-সর্বস্ব ছিল না। একজন বলিষ্ঠ রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকায় তিনি ছিলেন দক্ষ, দূরদর্শী ও সময়নিষ্ঠ।
তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলব্ধি করেছিলেন কৃষির উন্নয়ন ছাড়া একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়ে তিনি আধুনিক কৃষির ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন, পরিকল্পনা কমিশন গঠন, কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থাপন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনঃগঠন করেন।
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সম্মানিত সভাপতি জনাব সাজ্জাদুল হাসান, এমপি, বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাটি জীবন দিয়ে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করে গিয়েছিলেন, কিছু বিপদগামী খুনি বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্যদেরকে ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ নৃশংসভাবে হত্যা করে দেশের অগ্রগতিকে স্থবির করার চেষ্টা করেছিল। সকল ষড়যন্ত্র বৃথা করে দিয়ে, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সকলকে অনুরোধ করেন শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত কে শক্তিশালী করে দেশের উন্নয়নকে আরও তরান্বিত করতে।
জাতীয় শোক দিবস আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জনাব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উক্ত আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কৃষি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত গবেষক, কৃষি বিজ্ঞানী, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরত্বপূর্ণ কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষকবৃন্দ, কৃষি অর্থনীতিবিদ এবং প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকসহ প্রায় তিনশত জন অংশগ্রহন করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জনাব মৌমিতা আসাদ, প্রধান, মানব সম্পদ ও প্রশাসন, এনআইসিই স্কূল এন্ড কলেজ, ঢাকা।
আরো পড়ুন : ৭০ বছরে পা রাখলেন শাইখ সিরাজ