শাহ্ আলম শাহী,দিনাজপুর থেকেঃ দিনাজপুরে শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা।’
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এর দিনাজপুরের নশিপুরস্থ অডিটোরিয়ামে ৪ দিনব্যাপী এ কর্মশালার আজ উদ্বোধন করেন, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কৃষি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম।
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড.গোলাম ফারুমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিরের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ বেনজীর আলম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, ও সিমিট বাংলাদেশ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. টিমোথি জে. ক্রুপনিক ।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন যে কোন মূল্যে দেশে গম ও ভুট্টার উৎপাদন বাড়াতে হবে। এ জন্য তিনি গবেষণার প্রতিটি ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন ও অপ্রচলিত এলাকায় গম ও ভুট্টার সম্প্রসারণের জন্য নানা কর্মসূচি গ্রহণ করার তাগিদ দেন।
চার দিনব্যাপী কর্মশালাটি আগামী ১৭ আগষ্ট পর্যন্ত চলবে। গম ও ভুট্টার উপর দেশের বিশেষজ্ঞ গবেষকদের উপস্থিতিতে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বিভিন্ন বিভাগের বিজ্ঞানীবৃন্দ। কর্মশালায় গম ও ভুট্টার উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন এবং এ সকল জাত কৃষকের মাঠে হস্তান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী বছরের গবেষণা কর্মসূচি চুড়ান্ত করা হবে।
দেশে গম ও ভট্টার প্রয়োজনীয় প্রজনন বীজ উৎপাদনের জন্য যে পরিমাণ জায়গা প্রয়োজন তা এই প্রতিষ্ঠানের নেই। বিশেষ করে ভুট্টার বীজ উৎপাদনের জন্য আইসোলেসন দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অনেক জমির প্রয়োজন। বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন সুগার মিলের জমি হতে অন্তত ২০০ একর জমি পাওয়া গেলে বীজ উৎপাদনে জমির অভাব কিছুটা দূর করা সম্ভব বলে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ড. গোলাম ফারুক আশাপ্রকাশ করেন।
দেশে গম ও ভুট্টার উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অসামান্য অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২ অর্জন করেছে।
এর আগে বাংলাদেশে ও ভুট্টার ফল আর্মিওয়ার্ম ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।ভুট্টার ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার দমন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেব উপস্তিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব জনাব সায়েদুল ইসলাম। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. দিলরুবা শারমিন, ন্যশনাল পেস্ট ম্যনেজমেন্ট এক্সপার্ট। কর্মশালায় মোট ৪ টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এর পক্ষে ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান শাহ বিগত তিন বছরের গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন। ভুট্টার ফল আর্মি ওয়ার্ম মোকাবেলায় ফরটেনজা দিয়ে বীজ শোধন একটি কর্যকরী উপায় যা ভুট্টা ফসলকে প্রায় ৫-৬ সপ্তাহ নিরাপদে রাখে। ভুট্টা গাছের ৫-৬ পাতা পর্যায়ে উপরি প্রয়োগ হিসেবে জৈব বালাইনাশক যেমন: ফাউলিজেন ব্যবহার করে এ পোকা দমন করা সম্ভব।
ভুট্টা বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ন দানাদার ফসল। গবেষকরা এ পোকা দমনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সক্রিয় সহযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
পরে অতিথিবৃন্দ সাংবাদিকদের সাথে ‘ মিট দ্যা প্রেস’ এ মিলিত হন। অনুষ্ঠানে ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশ নেন।
(শাহ্ আলম শাহী)
দিনাজপুর থেকে।
আরো পড়ুন : *****জরুরী নিয়োগ *****