বিশিষ্টজনদের মতে ‘সংকুচিত হয়ে পড়ছে স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্র’ 

ক্রাইম নিউজ তথ্য-প্রযুক্তি পুরুষ নির্যাতন প্রচ্ছদ মুক্তমত

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ৪১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা বলেছেন, দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্র দিন দিন সংকুচিত হয়ে পড়ছে।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানান বিশিষ্টজনেরা। বিবৃতিতে তাঁরা দ্রুত মতিউর রহমান ও শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা বলেন, কোনো সংবাদ প্রকাশে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে প্রতিবাদ জানাতে পারেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ ও মামলা করতে পারেন।

কিন্তু এভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং রাতের অন্ধকারে সাংবাদিককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়া দেশে আইনের শাসনের পরিপন্থী।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ঘটনায় আমরা দেখতে পেয়েছি, সাংবাদিক নির্যাতনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে এই আইনের নজিরবিহীন অপপ্রয়োগ চলছে। ভিন্নমত দমন ও সমালোচনার সীমারেখা এতটাই টেনে দেওয়া হয়েছে যে এখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্র দিন দিন সংকুচিত হয়ে পড়ছে।’

বিবৃতিদাতারা হলেন আনু মুহাম্মদ, বদিউল আলম মজুমদার, শহিদুল আলম, আবদুল লতিফ মাসুম, রেহনুমা আহমেদ, নূর খান লিটন, সাকিব আলি, সুব্রত চৌধুরী, আলতাফ পারভেজ, ফিরোজ আহমেদ, রোবায়েত ফেরদৌস, তানজীম উদ্দিন, ফারুক ওয়াসিফ, মোহসীন রশিদ, মারুফ মল্লিক, কামরুল আহসান, সালেহ হাসান নকিব, ইফতিখারুল আলম মাসউদ, হাসনাত কাইয়ুম, শওকত হোসেন, ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, ফরিদা আক্তার, মাইদুল ইসলাম, মোশাহিদা সুলতানা, রেজাউর রহমান লেনিন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, জিশান মহসিন, নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, মাহাবুব রহমান, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, জাকারিয়া পলাশ, রোজীনা বেগম, দিলশানা পারুল, রবিউল করিম মৃদুল, মুতাসিম বিল্লাহ, সোহেল রানা, এহসান মাহমুদ, নিজাম উদ্দিন, শামীম রেজায়ী, মাহা মির্জা ও আরিফুল ইসলাম আদীব।

দেশে একটি ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, অনেকে স্বাধীনভাবে তাঁদের মনের কথা বলতে পারছেন না। লেখার স্বাধীনতা না থাকায় এবং নিজের জীবনের ভয়ে ও পরিবারের নিরাপত্তায় অনেক সাংবাদিক পেশা পরিবর্তন করছেন, অনেকে দেশান্তরি হচ্ছেন। দেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে দুর্নীতি ও লুটপাট হলেও তার খবর প্রকাশ করা দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে দেশে সাংবাদিকতার যে আদর্শ পেশা ও গৌরব তা হারিয়ে যাবে।

আরো পড়ুন : গোবিন্দগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৭টি গাছ কেটে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীমহল

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *