কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রকে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নেওয়ার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন দৃশ্যে সমালোচনা করেছেন অনেকে।
কোমরে রশি বেঁধে আদালতে তোলা ছাত্রের নাম হামিম মো. ফাহিম (২৫)। তিনি চট্টগ্রামের সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবির শিক্ষার্থী। তার বাড়ি পেকুয়া চৌমুহনী এলাকায়। ফাহিম পেকুয়া সদরে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন।
ফাহিমের কয়েকজন বন্ধু বলেন, আদালতে করা একটি মারামারির মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে নেওয়ার পথে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের মতো তাকে কোমরে বড় রশি বেঁধে আদালতে নেওয়া হয়। এতে ফাহিমের মতো হাজারো ছাত্র মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন।
পুলিশ ও ফাহিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মারামারি মামলায় পরোয়ানায় গত শনিবার রাতে ফাহিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল রোববার পেকুয়া থানা-পুলিশের একটি দল কোমরে রশি বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে তাকে আদালতে হাজির করে। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ফাহিমের বাবা শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘গত ডিসেম্বরের শুরুতে আমার ছোট ছেলের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ৯৯৯-এ ফোন করা হলে পুলিশ এসে আমার ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়। পরে বড় ছেলে ফাহিম বাদী হয়ে মামলা করে। এরপর প্রতিপক্ষের লোক গোপনে আদালতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা করলে ওয়ারেন্ট হয়ে যায়। মামলা, পরোয়ানা—এসবের কিছুই আমরা জানতাম না।’
চকরিয়া অ্যাডভোকেটস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিফতাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, প্রথম কথা হলো ফাহিম একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র। তার বিরুদ্ধে আগের কোনো মামলা নেই। একটি মারামারি মামলায় গ্রেফতার করে এভাবে কোমরে রশি বাঁধা বা ডান্ডাবেড়ি পরানো যায় না। একজন ছাত্রকে কোমরে রশি বাঁধা অমানবিক।
এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, নিরাপত্তা বলয়ে আসামিকে থানা থেকে আদালতে নেওয়া হয়েছে। এর বেশি কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এম এম রকীব উর রাজা।
আরো পড়ুন : রায়পুরায় বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ মামলায় পুলিশ সদস্য কারাগারে