বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার বেতাগীতে জমি-জমা বিরোধের জের ধরে বসত ঘরের প্রতিপক্ষের কক্ষ তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে গত ১০ দিন ধরে। সহায় সম্বল আটকে থাকায় জনপ্রতিনিধি গিয়েও এর কোন সূরহা করতে না পারায় চরম অসহায়াত্বে কাটছে গৃহবধূ লাবনী বেগমের জীবন।
জানা গেছে, উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত: আজীজ মুছল্লীর ছেলে মো: দুলাল মুছল্লী এবং মৃত: রফেজ উদ্দীনের ছেলে মো: খবির মুছল্লী দীর্ঘদিন ধরে যৌথ পরিবার হিসেবে বসবাস করে আসছিলো। তারা সম্পর্কে দুই জন চাচাতো ভাই। লাবনীর স্বামী দুলাল মুসল্লী জীবিকার তাগিদে ঢাকার শহরে কাজ করে বেড়ায়। প্রতিপক্ষ খবির মুছল্লীর বসতঘর ও তাঁদের বসত ঘর যৌথ বিধায় তাঁর দুই সন্তান সহ যুগ যুগ ধরে একত্রে ঐ ঘরে বসবাস করে আসছিল।
গৃহবধূ লাবনী বেগম জানান, গত এক বছর পূর্বে গালি গালাজ করে বসত ঘর থেকে তাঁরা নামিয়ে দেয় আর তাঁদের খাট, আলমীরা সহ যাবতীয় আসবাবপত্র ও মালামাল যৌথ ঘরের পেছনের বারান্দায় একটি আলাদা রুমে তালা দিয়ে রাখেন। সেই থেকে বসত ঘরের পাশে ছাপড়া দিয়ে সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন লাবনী। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সাংবাদিকরাও গেলে তালা দেওয়া কক্ষটি দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে খবির মুছল্লী সহ তার পরিবারের লোকজন । পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে কতিপয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে তাঁদের জমিজমা ও বসত ঘরের ভাগ দাবি করলে প্রতিপক্ষ নানা অপকৌশল আটতে থাকে।
গৃহবধূ লাবনী বেগম অভিযোগ করেন, গত ২২ এপ্রিল‘২০২৩ অহেতুক তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হয়ে এক পর্যায় প্রতিপক্ষ খবির মুছল্লী (৫৫), তাঁর ছেলে আবু সালেহ (৩০), ইমাম হোসেন (৩২), তাঁর স্ত্রী সারিজা বেগম (৫০), ছেলে বউ সুবর্ণা বেগম (২৫), বোন জবেদা বেগম (৪০) ও ভাই হাবীবুর রহমান মুছল্লী (৫০) লাবনী বেগম (৩০) কে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত এবং ধাওয়া করে ঘরে ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা চালায়। স্থানীয়রা আশঙ্কা জনক অবস্থায় লাবনীকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। মারধরের সময় ৯২ হাজর টাকা মূল্যের স্বর্ণের ঝুমকা ও চেইন এবং বসত ঘরের কক্ষের ভেতরে ট্যাঙ্ক ভেঙে জমাকৃত নগদ ৪৫ হাজার টাকা ও মওজুদকৃত সারে ৩ মন ধান চুরি করে নিয়ে যায় তাঁরা।
এ ঘটনায় আপোস মীমাংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ঐ ৭ জনকে আসামী করে লাবনী বরগুনার বেতাগী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সিআর (নং-১১৯’তারিখ:২৫-০৪-২০২৩ খ্রি:) একটি মামলা করেন। মামলাটি চলমান রয়েছে। এদিকে প্রতিপক্ষ খবির মুছল্লীর ছেলে ইমাম হোসেন বাদী হয়ে লাবনী বেগম ও স্বামী দুলাল মুছল্লী ঢাকায় অবস্থান করা সত্বেও সম্প্রতি ৫জনের বিরুদ্ধে সাজানো একটি চুরির মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। মামলাটি তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খোকন খান বলেন,‘খবর শুনে আমি সেখানে গিয়ে ছিলাম। গিয়ে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ কক্ষটি খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে ছিলাম। কিন্ত ঘরে উপস্থিত খবির মুছল্লীর লোকজন খুলতে রাজি হয়নি অবশেষে চলে আসি।’