সরকার যখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সেই সুযোগে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করছে অসাধু সিন্ডিকেট। ফলে ভরা মৌসুমেও আলু, পিঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পিঁয়াজ। গতকাল রাজধানীর পাইকারি বাজারগুলোতে আলুর কেজি মানভেদে ৬২ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকার মধ্যে। তবে পাড়া-মহল্লার কোনো কোনো দোকানে আরও বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মালিবাগ, রায়েরবাগ বাজারসহ স্থানীয় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকান ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে হঠাৎ করেই আলুর এমন বাড়তি দাম সম্পর্কে জানা গেছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির পণ্য মূল্য তালিকা অনুযায়ী, গত বছরের এ সময়ের তুলনায় আলু ২২৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। গত বছর এ সময়ে আলুর দাম ছিল প্রতিকেজি ১৬ থেকে ২২ টাকা পর্যন্ত, যা এক মাস আগেও ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা প্রতিকেজি। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। বর্তমান টিসিবির পণ্য মূল্য তালিকা অনুযায়ী বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। বাজারে আলুর দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় আলু কম থাকায় সরকার দেড় মাসের জন্য আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছিল। তবে আমদানি বন্ধ করায় কিছুদিন ধরে বাজারে এর দাম বেড়েছে। পাশাপাশি এখনো পাইকারি বাজারগুলোতে নতুন আলু পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ হয়নি। সে কারণে নতুন ও পুরনো দুই ধরনের আলুর দামই বাড়তি। রায়েরবাগ বাজারের বিক্রেতা হানিফ মাহমুদ বলেন, পাইকারি বাজারে আলু কিনতে গিয়ে আড়তদারদের কাছ থেকে জানতে পারি, চলতি মাসের মাঝামাঝিতে আলু আমদানি বন্ধের পর থেকেই পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই থেকে তিন দিন আগে পাইকারি বাজারে আলুর দাম এ মাসের সর্বোচ্চ উঠেছিল প্রতিকেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। তবে সে তুলনায় আজ কিছুটা কমে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। বেশি দামে কেনায় আমরা বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করছি। এ কারণে আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতি হচ্ছে, ক্রেতা কম পরিমাণে ক্রয় করছে। ফলে বিক্রিও কমে গেছে। রায়েরবাগ বাজারের ক্রেতা শরিফুদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমি গত মাসের শেষের দিকে ৫০ টাকা কেজিতে আলু কিনেছি। আজকে বাজারে এসে শুনি দাম ৭৫ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের না খেয়ে থাকতে হবে।
এদিকে পিঁয়াজের দাম এখনো বাড়তি রয়েছে। তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় বাজারে বেশি বিক্রি হচ্ছে নতুন পিঁয়াজ। দেশি নতুন পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে। এ ছাড়া ভারতীয় পিঁয়াজ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি, দেশি পুরাতন পিঁয়াজ ২০০ টাকা, আর তুরস্ক থেকে আমদানি করা বড় সাইজের পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। ক্রেতারা বলছেন, যে হারে পিঁয়াজের দাম বেড়েছিল, সে তুলনায় কমেনি। ক্রেতার নাগালে পিঁয়াজের দাম নিয়ে আসতে সরকারকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরো পড়ুন : গাজীর বাসায় প্রিসাইডিং অফিসারদের গোপন বৈঠক, আচরণবিধি চরমভাবে লঙ্ঘন