স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে : ভাগ্য খুলেছে আলোচিত সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীর। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে তাকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সমর্থন দেয়া হয়েছে- এমন খবর হাউর হয়েছে। শুরু থেকে খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে এ আসনে নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। তবে গুঞ্জন ওঠে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিবে। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীর দেখা করার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এদিকে এমন খবরকে গুজব বলে জেলা, উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের উদ্যোগে ফটিকছড়ি সদরে গুজব বিরোধী সমাবেশ করা হয়। সেখানে সাইফুদ্দীনের বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দেন। সমাবেশে নেতারা বলেন, নৌকা সনির আছে এবং থাকবে। তবে এ বিষয়ে সাইফুদ্দীন মাইজভাণ্ডারী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। এরপর তিনি আমাকে সমর্থন দেয়ার বিষয়টি জানান।
আমাকে ইতিমধ্যে পেয়ারু সাহেব (জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) ফোন দিয়েও নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এখন আশা করছি আমার বিজয় নিশ্চিত। আর আমার চাচাও নাকি (নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী) আজকে জুমার নামাজে বলেছেন আমাকে সমর্থন দেয়া হচ্ছে। তবে উনি এটা বলেছিলেন কিনা এখনো আমি নিশ্চিত নই।
সাইফুদ্দীন মাইজভাণ্ডারীকে সমর্থন দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, আমি ওইভাবে নির্দেশনা পাইনি। তবে শুনেছি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যখন জানিয়েছেন, সেটাই দলীয় সিদ্ধান্ত ধরে নিতে হবে। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, ওই আসন আগেই সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা ছিল। তবে কীভাবে জানি সনি নৌকা পায়। যেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেকেই তার পক্ষে কাজ করছেন। বৃহস্পতিবার ফটিকছড়িতে সনির সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারিও ছিলেন। এখন যেহেতু নেত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে, সেহেতু উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেকেই সাইফুদ্দীনের পক্ষে কাজ করবেন। আমি ভোট দিলে একতারাকেই দেবো।
এ বিষয়ে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগকে সুপ্রিম পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নৌকার কর্মীরা যেন তাদের পক্ষে কাজ করে। আমাকে ফোন করা হয়েছে, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
নৌকার মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে তার মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। সুপ্রিম পার্টির দপ্তর সম্পাদক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, আপনারা যা শুনেছেন বিষয়টি সঠিক।
প্রসঙ্গত, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফটিকছড়ি আসন থেকে প্রথমে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়েছিল সাবেক এমপি রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে। তবে শেষ মুহূর্তে এসে তাকে সরিয়ে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়। আর এবার নজিবুল বশরের ভাতিজা ও সদ্য গঠিত সুপ্রিম পার্টির প্রধান শাহজাদা সাইফুদ্দীন মাইজভাণ্ডারীর কারণে ভাগ্য বিপর্যয় হচ্ছে বর্তমান সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সনির।
আরো পড়ুন : আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোর দল এদেশে রাজনীতি করার অধিকার নাই