ভিসা নিষেধাজ্ঞায় আই অ্যাম নট আনহ্যাপি

আন্তর্জাতিক জনপ্রতিনিধি তথ্য-প্রযুক্তি পুরুষ পুরুষ অধিকার প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি লাইফ স্টাইল হ্যালোআড্ডা

গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়ার কারণে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগের সদস্যসহ বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে কারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন তা নিয়ম অনুযায়ী প্রকাশ করেনি। ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন, গুজব বাতাসে ভাসছে। নানা জনের নাম আসছে আলোচনায়। সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলের রাজনীতিবিদরাও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বলা হয়েছে। জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি ও দলটির সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছেন, এমন তথ্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

গতকাল তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি অখুশি না। আমি শুনেছি আমাকেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমার আমেরিকার ১০ বছরের ভিসা আছে। আমার এখন যাওয়ার কোনো ইচ্ছাও নেই, সুযোগও নাই। সামনে নির্বাচন। গত পাঁচ বছরেও আমেরিকা যাইনি।

ভিসা নীতি নিয়ে তিনি বলেন, এটা আমেরিকার নিজস্ব ব্যাপার। তাদের দেশে কারা যাবে, না যাবে এটা তাদের নীতিমালা। আমরা যদি মনে করি চায়না থেকে লোক আসলে আমাদের জন্য ক্ষতিকর, এটা আমরা করতেই পারি। এখানে আন্তর্জাতিকভাবে কোনো কিছু করার নাই। আন্তর্জাতিক কেউ তো কারও দায়িত্ব নেবে না। বাংলাদেশ থেকে কেউ যেয়ে যদি ক্ষতি করে তাহলে দায়িত্ব কে নেবে। যখন তারা দেখবে এই লোকটা হার্মফুল কিনা, এই লোকটা কোনো ক্ষতি করবে কিনা। সেই কারণে ভিসা নীতি করতেই পারে। এটা তাদের জন্যও ভালো। বাইরে থেকে যারা যাবে তাদের জন্যও ভালো। যারা তাদের দেশে যাবে তাদের জন্যও সতর্ক বার্তা আমেরিকায় কীভাবে চলাফেরা করতে হয়। আমি এটাকে খারাপ কিছু বলছি না।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটাতে প্রভাব পড়ার কোনো সুযোগই নাই। নির্বাচন নির্বাচনের মতো সময়মতো হয়ে যাবে। এখানে প্রভাব পড়ার কোনো উপায় নাই, কারণ নাই। এটাকে তারা পুঁজি করে যদি কিছু করে তখন কিছু ভুল ভ্রান্তি হবে তখন তাদের এই নীতিমালাটা পথভ্রষ্ট হবে। এখন তারা যদি নির্বাচন নিয়ে কিছু করে তাহলে আমার কাছে মনে হয় না ঠিক হবে তাদের জন্য।

তিনি বলেন, আমি শুনেছি আমাকেও একটা দিয়েছে। কয়েক জায়গায় দেখেছি। পত্রিকাও বিষয়টা জানতে চাচ্ছে। বাট আই অ্যাম নট আনহ্যাপি। আমি অসন্তুষ্ট নই। এটা তাদের ব্যাপার তারা করতেই পারে। আমার আমেরিকা যাওয়ার ১০ বছরের ভিসা আছে। আমার এখন যাওয়ার সুযোগও নাই। আমার সামনে নির্বাচন। আমি যাইও না বোধ হয় ৫ বছর। আমার ভিসা দেয়া আছে আগেরই। আমি চাইলেই না বোঝা যাবে আমাকে ভিসা দেবে কিনা। আমি চাইবো না তাদের কাছে। আমি যখন একবার জানতে পেরেছি আমার সম্বন্ধে তারা বলেছে, পত্রিকায় আসছে। দু’একটা মানুষজনও আমাকে বলেছে। বাট আই অ্যাম নট ইন্টারেস্ট টু গো টু আমেরিকা।

জাপার আর কারা আছেন?
রাঙ্গা নিজেই নিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের তথ্য প্রকাশ করলেও দলের আর কারা এই নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন এ নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে। অন্তত তিন জন নেতার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে দলের ভেতরে। তাদের মধ্যে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় একজন শীর্ষ নেতা, দলের দুই জন সিনিয়র নেতার নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ভিসা নীতি অবশ্যই একটা লজ্জার বিষয়। তবে এটা নিয়ে অতি শঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। আমি মনে করি না এর মাধ্যমে ব্যাপক পট পরিবর্তন হবে। তবে আমি মনে করি এর মাধ্যমে আমাদের সতর্ক হতে হবে কথাবার্তা এবং ব্যবহারে।

তিনি বলেন, এটার তো কোনো তালিকা নাই। তবে জাতীয় পার্টি একটা গুরুত্বপূর্ণ দল। সেখানে নাম থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে জাতীয় পার্টির কেউ তো মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা নয়। সাধারণত এগুলো সরকারি দলের থেকে হয়ে থাকে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে দলের মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু বলেন, বৃহত্তর গণতান্ত্রিক স্বার্থে আমি মনে করি আমেরিকার উদ্দেশ্য মহৎ। তারা বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়।

আরো পড়ুন : ভিসা নিষেধাজ্ঞার পর আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিল বাংলাদেশি কূটনীতিক

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *