রূপগঞ্জের কার দিকে ঝুঁকছে জনগণ

জনপ্রতিনিধি জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি নির্বাচন পুরুষ প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোতেও। আর সেই তালিকায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা। জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় এরই মধ্যে গত কয়েক বছরে গড়ে উঠেছে শিল্পকারখানা, আবাসন কোম্পানিসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠান। রয়েছে মালয়েশিয়ার আদলে গড়ে ওঠা পূর্বাচলের মতো উপ-শহর।

মোট ৫টি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত নারায়নগঞ্জ জেলা। রাজধানীর সবচেয়ে কাছের জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ। ২৯২ বর্গমাইলের নারায়নগঞ্জ জেলাটি নানা দিক থেকে ঐতিহ্য বহনের পাশপাশি ঐতিহাসিক পানাম নগরী, জামদানি, মসলিনের গোড়াপত্তনও হয়েছিল এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই। সোনালি আঁশ পাটেরও সুখ্যাতি জেলাটি জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।

দেশের সবচেয়ে ছোট জেলা নারায়ণগঞ্জের একটি উপজেলা রূপগঞ্জ। গত কয়েক বছরের উন্নয়নে রূপগঞ্জের রূপ আমূল পাল্টে গেছে। এলাকাবাসির মতে তা সম্ভব হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজীর জন্য। এই আসনে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এসময় তিনি এলাকার ব্যাপক উন্নয়নে কাজ করেছেন। জলাবদ্ধতা অপসারণে উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ, নতুন নতুন শিল্প কল কারখানা স্থাপন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করেও তিনি প্রশংসা কুড়িয়েছেন এলাকাবাসীর।

স্থানীয়দের ভাষ্য, একজন মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া নিজ এলাকার এমন উন্নয়ন কারো দ্বারা সম্ভব নয়।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাম দস্তগীর গাজী ছাড়াও এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন আরও ছয় জন। এর মধ্যে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া, জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান, জাকের পার্টির যোবায়ের আলম ভূঁইয়া, ইসলামী ফ্রন্টের এ কে এম শহিদুল ইসলাম রয়েছেন। তবে ভোটের দৌড়ে মাঠে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী এখনও বেশ এগিয়ে বলে জনমতে ওঠে আসে।

তাকে নিয়ে দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলেন, গোলাম দস্তগীর গাজী সব দিক থেকেই যোগ্য প্রার্থী। তিন বারের সাংসদ, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, দলের সংকটময় মুহূর্তেও থেকেছেন অবিচল। একজন শিল্পপতি এবং মন্ত্রী হওয়ার পরও নিজ এলাকায় যথেষ্ট সময় দেন। রূপগঞ্জে গাজীর বিকল্প কেবল তিনি নিজেই।

এদিকে ভোটের মাঠে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও রূপগঞ্জের ভোটারদের মুখে গোলাম দস্তগীর গাজীকে নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার পক্ষে কাজ করছেন। এলাকাবাসী বলছেন, গোলাম দস্তগীর গাজীর রাজনীতিক হিসেবেই নয় একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছেন। মন্ত্রী থাকালীন এলাকায় ব্যপক উন্নয়নের কারণেই জনমানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।

এর আগে প্রথম দুই দফায় সংসদ সদস্য এবং গত পাঁচ বছর সরকারের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দেড়যুগে রূপগঞ্জকে আধুনিক করণে তার ভূমিকার কথা বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক সময়ের অবহেলিত এক উপজেলা এখন উন্নয়নের মডেল।

এদিকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তবে এটি ভালো চোখে দেখছেন না দলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপির নেতাকর্মী নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চান। তবে তার পক্ষে বিএনপির হাতেগোনা নেতাকর্মী রয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম দলের নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন।

নির্বাচনে ভোটের প্রসঙ্গে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে দল আমাকে মনোনয়ন দেওয়ায় পরপর তিনবার জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত হই। বর্তমানে এ আসনটিতে আমার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন অনেক শক্তিশালী। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকাকে বিজয়ী করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এ আসনটি উপহার দিয়েছি। এবারও তাই হবে বলে আশা করছি।

এসময় তিনি এক সময়ের অবহেলিত এই রূপগঞ্জকে সাজাতে তার নিরলস পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা অব্যাহতের অঙ্গীকার করেন।

গোলাম দস্তগীর গাজী জেলায় অবস্থিত পূর্বাচল উপশহর, নতুন নতুন শিল্পকারখানা, ভুলতা ফ্লাইওভার, গাজী সেতু, কাঞ্চন সেতু, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণ, নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও স্থানীয়দের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করাসহ নানা উন্নয়নের চিত্র এলাকাবাসীর কাছে তুলে ধরেন।

অন্যদিকে নির্বাচনে ভোট চাইতে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, রূপগঞ্জের সন্তানই রূপগঞ্জের এমপি হবেন। জনগণের এ চাওয়া পূরণ করতে আমি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। আমি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আমার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী রয়েছেন।

আর তৃণমূল বিএনপি থেকে প্রার্থী হওয়া তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমি রূপগঞ্জে গ্যাস এনেছি। বিআরটিসির চেয়ারম্যান থাকাকালে রূপগঞ্জের মানুষকে চাকরি দিয়ে ২৬ মাস জেল খেটেছি। আমি হাইকোর্টে রিট করে ভূমিদস্যুদের বালু ভরাট বন্ধ করেছি। রূপগঞ্জের মানুষ চায় আমি রূপগঞ্জ থেকে নির্বাচন করি। আমি নির্বাচিত হলে রূপগঞ্জ বদলে দেব।

প্রচারণা আর জনগণের কাছে ভোট চাইতে নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের দুয়ারে দুয়ারে হাজির হতে পিছিয়ে নেই জাপা প্রার্থী সাইফুল ইসলাম। তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বিষয়ে বলেন, আমি নির্বাচিত হলে রূপগঞ্জের শিক্ষা খাতে উন্নয়ন করব। রূপগঞ্জের রাস্তাঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন করব। রূপগঞ্জ থেকে মাদক নির্মূল করব।

তবে জয়ের ব্যাপারে প্রচণ্ড আশাবাদী আওয়ামী মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী। কারণ তার বিশ্বাস গত দেড়যুগে এলাকাবাসীর আস্থা কুঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন : আজ হযরত শাহজালাল (র.) ও হযরত শাহপরান (র.) এর মাজার জিয়ারত করবেন প্রধানমন্ত্রী

 

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *