১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে লক্ষ্মীপুর-৩ সংসদীয় আসন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সম্ভাব্য প্রাার্থীদের মধ্যে চলছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। চষে বেড়াচ্ছেন মাঠ। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছবি সম্বলিত পোস্টার-ব্যানারে ছেঁয়ে গেছে পুরো এলাকা। লক্ষ্মীপুর-৩ সদর আসনটি দীর্ঘদিন থেকেই বিএনপি’র দুর্গ হিসেবে পরিচিত থাকলেও এখন আওয়ামী লীগের দখলে। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিবিহীন ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে এমপি নির্বাচিত হয় আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সাল বাদে নব্বইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এ আসনে যতগুলো ভোট হয়েছে তার সবগুলোতেই জয়লাভ করেছে বিএনপি। আগামী নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দুই বারের এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। এজন্য আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সোচ্চার হয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি’র ভোট ব্যাংকে হানা দিয়েছে জামায়াত ইসলামী।
এরমধ্যে বিএনপি’র নারী ভোটারদের বিশাল একটি অংশ জামায়াতে ইসলামীর কার্যক্রমে ধাবিত হচ্ছে। বিগত নির্বাচনগুলোতে এ আসনের নারী ভোটারদের প্রতি বিএনপি’র একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থাকলেও এখন জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে। এ আসনে আগামী নির্বাচনে শহীদ উদ্দিন এ্যানী ছাড়াও জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব ও সাবেক পৌর মেয়র সাহাবুদ্দিনের নাম শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, ডেলিকেট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, সজিব করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী এমএ হাসেম, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ সাত্তার ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমআর মাসুদের নামও শোনা যাচ্ছে। জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ড. রেজাউল করিম। এদিকে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপি তার ঘাঁটিকে পাকাপোক্ত করে রাখতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই। আমি এই সদর আসন থেকে মনোনয়ন চাইবো। কেন্দ্রীয় বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক ও জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে গিয়ে খালেদা জিয়া এখন কারাবন্দি। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার ফিরে পেতে নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। পরিস্থিতিই বলে দিবে কী করবো। তারপরও বিএনপি নির্বাচনে গেলে এখানে আওয়ামী লীগের নির্মম পরাজয় হবে। জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, গত ১৭ বছর জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে শক্ত হাতে দলকে নেতৃত্বে দিয়েছিলাম। এখন সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। গণতন্ত্র রক্ষার্থে খালেদা জিয়ার নেতৃৃত্বে বিএনপি’র সব আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু বলেন, বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করছে। সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে মনোনয়ন চাইবো। জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও ডেলিকেট গ্রুপের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। এই কারণে মানুষ আওয়ামী লীগের পক্ষে আছে এবং আওয়ামী লীগের পক্ষেই রায় দিবে। দেলোয়ার হোসেন বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিবে বলেও আশা করছি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি প্রার্থী ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া আমরা কোনো নির্বাচনে যাবো না। খালি মাঠে কাউকে এককভাবে গোল দিতেও দেয়া হবে না। আমাদের দল আগের চেয়ে এখন সাংগঠনিকভাবে সুসংগঠিত। এই আসন থেকে জামায়াতে ইসলামী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে, সে অনুপাতে কাজ করছি। সবার কাছে যাচ্ছি। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এমআর মাসুদ বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নেতৃত্বে দল সুসংগঠিত ও শক্তিশালী। জনপ্রিয় এ সংগঠন দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে আসছে। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবো।
আরো পড়ুন : ধর্মশালা স্টেডিয়ামে তামিম ও বরফ শূন্যতায় ভুগবে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা