নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার ত্রাস সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাঁরা বলেন, সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। সরকারের পদত্যাগ নিয়ে কোনো টালবাহানা চলবে না। লাগাতার কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার পতনের আন্দোলন তীব্রতর করা হবে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনের সড়কে আয়োজিত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের এক দফা দাবিতে সমাবেশটি করা হয়।
বর্তমান সরকার মিথ্যার ওপর ভর করে টিকে আছে বলে মন্তব্য করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, এই সরকারকে ভোট চোর বললে অসম্মান করা হয়, এই সরকার ‘ভোট ডাকাত’। জনস্রোত দেখে এই সরকার রাগের চোটে সমাবেশস্থলের ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেয়। সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। রাগের মাথায় নয়, আবেগে নয়, অনেক হিসাব-নিকাশ করে এই আন্দোলনকে বিজয়ের পথে নিয়ে যাওয়া হবে।
সরকার দেশকে রক্তাক্ত করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম রব। তিনি বলেন, সরকার গন্ডগোল করতে চায় বলেই বিরোধীদের কর্মসূচির দিনে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। সমাবেশে আসা তো অপরাধ না, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের তল্লাশি করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিরোধীদের কর্মসূচিতে হামলা হলে জনগণ ছেড়ে দেবে না।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মানুষের শরীর নষ্ট করে, তেমনি এই মেয়াদোত্তীর্ণ সরকার দেশকে নষ্ট করছে। এই সরকার মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক পণ্যে পরিণত করেছে।
বর্তমান সরকারের আর বেশি দিন বাকি নেই দাবি করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সরকারের পদত্যাগ নিয়ে কোনো টালবাহানা চলবে না।
সরকার শান্তি সমাবেশের নামে গুন্ডা বাহিনী নিয়ে জনগণকে ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দলগুলোর প্রেমে পড়েছে। তাই বিরোধীদের পিছু পিছু, দেখাদেখি কর্মসূচি দেয়। কিন্তু এই প্রেম প্রেম নয়, এটি হামলা করার জন্য ও মানুষকে ভয় দেখানোর ষড়যন্ত্র। সরকারকে ত্রাস সৃষ্টির দায় নিতে হবে।
সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নিজেদের জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেছে দাবি করে জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকার তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার একটা লক্ষণ দেখাতে পারেনি। আওয়ামী লীগ বলে, বিদেশিরা নাকি হস্তক্ষেপ করে। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে তাদের ঢোকার সুযোগ দিয়েছে সরকার।
এক দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোনায়েদ সাকি। আগামীকাল বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান প্রমুখ।
আরো পড়ুন : রেলওয়ের উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী