নিজস্ব প্রতিবেদক : চাকরিতে পুনর্বহাল ও বিচারব্যবস্থার সংস্কারসহ তিন দফা দাবিতে ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ জাহাঙ্গীর গেটের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। তাদেরকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শৃঙ্খলা পরিপন্থি বিভিন্ন কাজে জড়িত হওয়ার অভিযোগে চাকরিচ্যুত ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। গতকাল সকালে চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনী সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম ‘সহযোদ্ধা’র ব্যানারে তারা সড়কে অবস্থান নেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন পরিবারের সদস্য ও স্বজনরাও।
সকাল ৮টার দিকে জাহাঙ্গীর গেটের বিপরীত সড়কে তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে মহাখালী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ফলে জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, বনানী, তেজগাঁও, বিজয় সরণিসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় এবং সেনানিবাসে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী এবং জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষ।
তাদের দাবিগুলো হলো- চাকরিচ্যুতির সময় থেকে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করা; যদি পুনর্বহাল সম্ভব না হয়, তাহলে তাদের সরকারি সব সুযোগ-সুবিধাসহ সম্পূর্ণ পেনশনের আওতাভুক্ত করা; যেসব আইনি কাঠামো ও একতরফা বিচারব্যবস্থার প্রয়োগে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সে বিচারব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে।
পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনরতদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে একটি পর্ষদ গঠন করে দাবিগুলোর বিষয়ে আলাপ-আলোচনার আশ্বাস পেয়ে দুপুর ১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছেড়ে দেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানসহ তিন বাহিনী প্রধানকে অবগত করার পরও ওনারা আমাদের দাবির প্রতি দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেননি। তাই আজ আমরা তিন দফা দাবিতে সপরিবারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।
‘সহযোদ্ধা’র প্রধান সমন্বয়ক মো. নাঈমুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের আমলে তেল চুরির ঘটনা দেখে ফেলার মতো তুচ্ছ ঘটনাসহ নানা ঠুনকো অভিযোগে অন্যায়ভাবে আমাদের চাকরিচ্যুত অথবা জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে আশ^াস পেয়ে আমরা অবরোধ তুলে নিলাম। দাবি না মানা হলে ফের অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
‘সহযোদ্ধার’ নৌবাহিনীর সমন্বয়ক মো. আব্দুল হাকিম বলেন, বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় ৩৫০ জন অফিসার, ৬০০ জন সৈনিককে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত ও অবসরে পাঠানো হয়েছে। এখন তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সামরিক বাহিনীর নিয়ম হলো, কাউকে চাকরিচ্যুত বা অবসরে পাঠানো হলে তিনি পুনর্নিয়োগের আবেদন করতে পারবেন না। এটি ব্রিটিশ আইন, আমরা আইনটির সংস্কারে আবেদন জানিয়েছে।
তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন জানান, সাবেক সশস্ত্র বাহিনীর কিছু সদস্য একাধিক দাবি-দাওয়া নিয়ে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এর ফলে এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। দুপুর ১টার দিকে কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিত করে চলে যান।
অঅরো পড়ুন : ট্রেইনি চিকিৎসকরা প্রত্যাখ্যান করলেন হাসনাত আবদুল্লাহর আহ্বান