স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি’র আন্দোলন প্রসঙ্গে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, সরকার গুলি করবে। কিন্তু আমাদের বুকে বল আছে। এই সংগ্রামের শেষ পর্যন্ত আমরা দেখে নিবো ইনশাআল্লাহ। আর এখন কথা বলার সময় নেই। এখন কাজের সময়। জনগণের শক্তি দিয়ে বর্তমান বাকশাল-২ সরকারের বন্দুক, বুলেট, গ্রেনেড, টিয়ারগ্যাস এবং জলকামানের শক্তিসহ সব শক্তিকে আমরা পরাভূত করবো। এই হচ্ছে আজকে আমাদের প্রতিজ্ঞা। গতকাল বিকালে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে বিএনপি’র উদ্যোগে ‘দলটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের (বীরউত্তম) ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মঈন খান বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান যে অর্জন করেছিলেন, সেই অর্জনের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আজকে আমাদের উপর একটি দায়িত্ব বর্তেছে, সেই দায়িত্ব হচ্ছে- আমরা জীবন বাজি রেখে দেশে আবার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। তাই জিয়াউর রহমানের যে গুণাবলী, সেসব গুণাবলী আপনারা আপনাদের জীবনে প্রতিভাসিত করুন। সেটা আমরা করতে পারলে দেশের মানুষের যে চাওয়া তা ফিরিয়ে দিতে পারবো। সেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে আজকে আমাদের রাজপথে থাকতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান আমাদের যে গণতন্ত্রের শিক্ষা দিয়ে গেছেন, সেই গণতন্ত্র আজকে বাংলাদেশে মৃত। আজকে আমরা এই শপথ গ্রহণ করবো, আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, সেই গণতন্ত্রকে আমরা পুনরুজ্জীবিত করবো ইনশাআল্লাহ। সেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে আজকে আমরা এখানে এসেছি। কিন্তু এই সংগ্রাম অনেক কঠিন ও দুরূহ। তবে সত্য ও মানুষের জয় হবেই। অন্যায় ও স্বৈরাচার পরাজিত হবে। এটা ইতিহাসের সত্য।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ৬০০ সিটের সংসদ সদস্য করে তাড়াহুড়া করে নতুন একটি সংসদ সৃষ্টি করে তারা আবার ক্ষমতায় এসেছে, কিন্তু দেশের ১২ কোটি ভোটার এবং ১৮ কোটি মানুষ ৭ই জানুয়ারি এই সরকারকে বর্জন করে তাদের মুখে কলঙ্ক লেপন করেছে। এটা আমাদের কথা নয়। আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের যে বক্তব্যে এটাই। শুধু তাই নয়, বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থা, সুশীল সমাজের সংস্থা এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো একত্রিত হয়ে ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনকে একটা ভুয়া, নাটক ও প্রহসনের নির্বাচন বলে ঘোষণা দিয়েছে।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। গণতন্ত্র মানে জনগণের শাসন। সেই জনগণ ভোট দেয়নি। সেই ভোট করে যারা ক্ষমতায় তারা সরকার হতে পারে না। সেই গণতন্ত্র লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান। তার নেতৃত্বে পুনরায় দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এই সরকার জিয়াউর রহমানের নাম শুনতে পারে না। তারা ভয় পায়। কারণ যেখানে তারা ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে জিয়াউর রহমান সফল হয়েছেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমি জানি আপনারা (নেতাকর্মীরা) হতাশ না। হতাশ হলে লড়াই চলতো না। আসুন লড়াইয়ের ময়দানে। এই লড়াই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের ঋণ পরিশোধের ময়দান। এই ময়দানে বিজয় অবশ্যম্ভাবী। এই সরকারের পতন হবে।
দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আজকে আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। তাই শুধু স্লোগানে হবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা আজকে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে আছি। আমরা আর কোনো দেশের (ভারত) অধীনে যাবো না। তারা আমাদের বন্ধু হিসেবে এবং জনগণের সঙ্গে যদি তারা থাকে তাহলে থাকবে। অন্যথায় নয়। কিন্তু তারা বাংলাদেশকে তাদের অধীনে নিতে চাচ্ছে। আমরা আর এদেশকে পরাধীন হতে দিবো না।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সভায় দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সস্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরো পড়ুন : ইরানে ‘সন্ত্রাসী আস্তানা’গুলোর ওপর পাল্টা হামলায় নিহত ৭