সেতু বিভাগ পদ্মা সেতুতে টোল আদায়ে মহড়া দিয়েছে

জাতীয় প্রচ্ছদ বিনোদন ভ্রমণ সফলতার গল্প হ্যালোআড্ডা

বিশেষ প্রতিনিধি : পদ্মা সেতুতে টোল দিয়ে গাড়ি পারাপারের মহড়া দিয়েছে সেতু বিভাগ। উদ্বোধনের পর টোল দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে এ সেতুতে। টোল আদায়ে যেসব যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে, সেসব ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, তা পরীক্ষা করার জন্যই দেওয়া হয়েছে ওই মহড়া।

সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে শুরু করে প্রায় এক ঘণ্টা মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় মহড়া চালানো হয়। এ সময় পদ্মা সেতু প্রকল্পের কয়েকটি গাড়ি একাধিকবার টোল প্লাজা পার হয়ে পুনরায় ফিরে আসে। গাড়িগুলোকে কখনো মোটরসাইকেল হিসেবে, কখনো কার, জিপ, আবার বাস কিংবা ট্রাক হিসেবে বিবেচনা করে টোল প্লাজা পার করা হয়। শ্রেণিভেদে টোলের নির্ধারিত হার অনুসারে রসিদও প্রিন্ট দেওয়া হয়।

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে মাওয়া ও জাজিরায় দুটি টোল প্লাজা আছে। প্রতিটি টোল প্লাজায় ছয়টি করে বুথ। এর মধ্যে একটিতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে টোল আদায় করার ব্যবস্থা থাকবে। বাকি পাঁচটিতে যানবাহন থামিয়ে হাতে টাকা সংগ্রহ করে চলাচলের অনুমতি দেবেন টোল আদায়ে নিয়োজিত কর্মীরা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় যানবাহন মালিকেরা অগ্রিম টাকা দিয়ে প্রিপেইড কার্ড সংগ্রহ করবেন। যানবাহনের সামনের গ্লাসে একটি ট্যাগ থাকবে।

যানবাহন টোল প্লাজার কাছাকাছি এলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা কেটে নেওয়া হবে। এ পদ্ধতিতে যানবাহন না থেমে দ্রুত চলে যাবে। তবে এ ব্যবস্থা চালু করতে ছয় মাস লাগতে পারে।

পদ্মা সেতুর টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন এবং চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।

তাদের সঙ্গে ৬৯৩ কোটি টাকায় ৫ বছরের জন্য চুক্তি হয়েছে। তারা আদায় করা টোলের অর্থ সরকারের ঘরে জমা করবে। আর সরকার তাদের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে পাওনা পরিশোধ করবে।

টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানই স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায়ের জন্য কার্ড ও ট্যাগ সরবরাহ করবে। তারা হাতে টোল আদায়ের জনবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও বসাবে। সেতুতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো ও দুর্ঘটনা ঘটলে যানবাহন অপসারণসহ যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও পালন করবে তারা।

টোল প্লাজায় যানবাহন এলে প্রথমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি প্রতিবন্ধক চলার পথ আটকে দেবে। সামনে জ্বলবে লালবাতি। অর্থাৎ যান চলার অনুমতি নেই। এরপর যানবাহনের শ্রেণি অনুসারে নির্ধারিত টোলের টাকা পরিশোধ করবেন চালক। টাকা বুঝে পেয়ে টোল আদায়কর্মী কম্পিউটার থেকে টাকার অঙ্ক উল্লেখ করে একটি রসিদ দেবেন চালককে।

এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিবন্ধক উঠে যাবে। জ্বলে উঠবে সবুজ বাতি। সেতুর ওপর দিয়ে চলতে থাকবে যানবাহন।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল সেতুর নির্মাণকাজের ব্যবস্থাপক দেওয়ান মো. আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, টোল আদায় কার্যক্রমের সবকিছু সঠিকভাবে চলছে কি না, সেই পরীক্ষা করা হয়েছে। টোল প্লাজায় অনেক কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হবে। মহড়ায় সব কাজ সমন্বিতভাবে হচ্ছে কি না, সেটাই দেখা হয়েছে।

আরো পড়ুন : র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের বিস্ময় দেখে যুক্তরাষ্ট্রও ‘প্রায় বিস্মিত’

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *