স্বতন্ত্র এখন আওয়ামী লীগের কারো চ্যালেঞ্জ, কারো গলার কাঁটা

অনুসন্ধানী জনপ্রতিনিধি জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি নির্বাচন প্রচ্ছদ বিনোদন রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন আসনে প্রার্থীদের ব্যাপক গণসংযোগ চলছে। সভা, সমাবেশ, মতবিনিময় এবং প্রচারপত্র বিলি করার মধ্য দিয়ে প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময় তারা নানা প্রতিশ্র“তি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেন। তবে কোন কোন আসনে ঈগলের ছোবলের আশংকায় নৌকা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

আরো পড়ুন : ঈগলের ছোবলের আশংকায় নৌকা

জলিলপুত্র জনের গলার কাঁটা স্বতন্ত্র
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবদুল জলিলের পুত্র আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জনের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষান। এ আসনটি জেলার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তারা দুজনে মাঠে কাজ করছেন সমান তালে। এবারের নির্বাচনে দুজনের অবস্থান শক্তিশালী হওয়ায় পাল্টে যেতে পারে ভোটের হিসাব-নিকাশ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রয়াত জলিলপুত্র ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন নৌকা পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও তিনি দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। এবার তার মুখোমুখি হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষান। তিনি টানা প্রায় ১৮ বছর ধরে নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকায় সেখানে বেশ প্রভাব রয়েছে তার। তাই এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে মাঠে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই। অন্যদিকে ভোটের মাঠে বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড জনসাধারণের মাঝে তুলে ধরছেন। তবে শহরবাসী বলছেন, এবারের ভোটযুদ্ধে দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

চ্যালেঞ্জে ফারুক চৌধুরী
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনটিতে টানা তিনবারের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। দলীয় নেতা-কর্মীরাও বিভক্ত এই তিন প্রার্থীকে ঘিরে। গোলাম রাব্বানী কাঁচি ও মাহিয়া মাহি ট্রাক প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। প্রচারণা শুরুর পর থেকে নানা চমক দিয়ে যাচ্ছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। তবে উচ্চ আদালত থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে ভোটের মাঠে সরব হন গোলাম রাব্বানী। এরপরই চিত্র বদলে যায় তানোর-গোদাগাড়ীর। স্থানীয়রা জানিয়েছেন আসনটিতে লড়াই হবে নৌকার সঙ্গে কাঁচির। আবার কেউ কেউ বলছেন, ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে। যেখানে নৌকা-কাঁচিকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে মাহিয়া মাহির ট্রাক।

গত ১৫ বছর ওমর ফারুক চৌধুরী এই আসনের এমপি থাকলেও আওয়ামী লীগকে এক কাতারে আনতে পারেননি। এবার তিনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন। এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন গোলাম রাব্বানী। তার আছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক। এ ছাড়া আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আকতারুজ্জামান সমর্থন জানিয়েছেন গোলাম রাব্বানীকে। ওমর ফারুক চৌধুরী জানান, দলীয় নেতা-কর্মীরা সবাই নৌকার সঙ্গেই আছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী জানান, এবার মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবে। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি বলেন, তিনি যেসব এলাকায় যাচ্ছেন, মানুষের সাড়া পাচ্ছেন।

নৌকা ছেড়ে ট্রাকে ওঠার হিড়িক
মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুর-১ আসনে নৌকা প্রতীকের কর্মী ও সমর্থকরা নৌকা ছেড়ে ট্রাকে ওঠার হিড়িক পড়ে গেছে। কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান ইদ্রিস আলী মাস্টারসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী নৌকা ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ট্রাকের প্রচারণায় নেমেছে। আবার কোথাও কোথাও নৌকা প্রতীকের অফিস পরিবর্তন হয়ে রাতারাতি ট্রাকের নির্বাচনি অফিস হয়েছে। মেহেরপুর-১ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে দুবারের সংসদ সদস্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও ট্রাক প্রতীক নিয়ে দুবারের সাবেক সদস্য প্রফেসর আবদুল মান্নান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ শালিকা গ্রামের যুবলীগের নেতা লিটিল বলেন, তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না হওয়ায় সবাই একমত হয়ে নৌকার অফিস তুলে দিয়ে ট্রাকের অফিস করে ট্রাকের প্রচারণায় নেমেছি। মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল মান্নান ছোট বলেন, এবারের নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসনের তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

নৌকার প্রার্থী জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যারা সব সময় দলের বিরুদ্ধে ছিল, মূলত তারাই নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ভোটাররা ওইসব নেতাদের ভালো করেই চেনেন। তাই ভোটে এর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না। তৃণমূল নেতারাসহ সব ইউপি চেয়ারম্যান ও দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন।

আরো পড়ুন : থামছেই না নির্বাচনি সংঘাত-সহিংসতা

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *