স্বরূপকাঠিতে কাঠের সিঁড়ি বেয়ে পাঁচ কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয়

ওকে নিউজ স্পেশাল জনদুর্ভোগ দুর্নীতি প্রচ্ছদ হ্যালোআড্ডা

স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের তারাবুনিয়া খালের ওপর প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে এক বছর আগে ৪৬ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ব্রিজের দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল না করতে পারায় কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি। চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে সেতুর দুই পারের শত শত মানুষ।

ওই সেতুর পাশে পুরনো লোহার সেতুটি চার মাস আগে ট্রলারের ধাক্কায় ভেঙে খালে পড়ে যাওয়ায় জনগণের দুর্ভোগ আরো চরমে ওঠে। খাল পার হওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ প্রতিদিন খেয়া নৌকায় যাতায়াত করতে বাধ্য হয়। খেয়ার বিড়ম্বনা থেকে পরিত্রাণ পেতে সম্প্রতি এলাকাবাসী নতুন সেতুতে ওঠার জন্য সিঁড়ি তৈরি করে তাতেই সেতু পারাপার হচ্ছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার মিয়ারহাট বন্দর থেকে নান্দুহার বাজার হয়ে বানারীপাড়া উপজেলায় যাতায়াতের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কের তারাবুনিয়া খালের ওপর চার কোটি ৮৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪৬ মিটার গার্ডার ব্রিজটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। মেসার্স এমএম বিল্ডার্স ও মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন যৌথভাবে ব্রিজটি নির্মাণ করে। মূল সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় এক বছর আগে শেষ হয়ে গেলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়নি। এ কারণে সেতুটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ওলিউল্লাহসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ব্রিজটি নির্মিত হওয়ায় তাঁদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে বরং এখন উল্টো তাঁদের দুর্ভোগ বেড়েছে। ওই সড়কের গাড়িচালক সুটিয়াকাঠি গ্রামের উজ্জ্বল ও নান্দুহার গ্রামের সুন্দর আলী জানান, সংযোগ সড়ক না থাকায় তাঁদের আয়-রোজগার অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে। ফলে অভাব অনটনে চলছে তাঁদের সংসার। প্রায় ১২-১৩ ফুট উঁচু সেতুতে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করতে গিয়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক বলেন, পুরনো ব্রিজের পাশে নতুন ব্রিজটি নির্মিত হওয়ায় অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেসব জমির ওপর দিয়ে অ্যাপ্রোচ সড়ক করার কথা সেসব জমির মালিকরা অত্যন্ত দরিদ্র। তাঁদের সামান্য জমি রাস্তায় চলে গেলে বিপদে পড়বেন তাঁরা। জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিয়েই অ্যাপ্রোচ সড়ক করতে হবে।

এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শেখ তৌফিক আজিজ বলেন, সংযোগ সড়ক নির্মাণের সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকসহ পিরোজপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস সাত্তার হাওলাদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সমস্যার সমাধানে কাজ চলছে।

আরো পড়ুন : শরীয়তপুরে দুই কিলোমিটার জাতীয় পতাকা নিয়ে ছাত্রলীগের র‍্যালি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *