স্বাধীনতার জন্য একাত্তরে যুদ্ধ করেছিলেন বাবা, মানুষের জন্য জীবন দিলেন ছেলে

ওকে নিউজ স্পেশাল জাতীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচ্ছদ মুক্তিযুদ্ধ হ্যালোআড্ডা

দেশের স্বাধীনতার জন্য একাত্তরে যুদ্ধে গিয়েছিলেন শামসুল হক। স্বাধীন দেশের মানুষের জানমাল রক্ষা করতে গিয়ে জীবন দিলেন তাঁর ছেলে মনিরুজ্জামান (৩০)।

গত শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত হন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য মনিরুজ্জামান। সোমবার জানাজা শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাঁকে। শামসুল হক ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।

মনিরুজ্জামান কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের নাইয়ারা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত শামছুল হকের ছেলে। তিনি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কুমিরা স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ভেতরে বিস্ফোরণে মনিরুজ্জামান মারা যান। রোববার রাত নয়টার দিকে লাশ তাঁর গ্রামের বাড়ি নাঙ্গলকোট উপজেলায় নাইয়ারাতে আনা হয়। এ সময় স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মনিরুজ্জামানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তারের বাবার বাড়ি পটুয়াখালী। স্বামীর মৃত্যুর খবরে দেড় মাস বয়সী মেয়ে জান্নাতুল মাওয়াকে নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়িতে আসেন। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সোমবার সকালে পার্শ্ববর্তী ঢালুয়া ইউনিয়নের চৌকুড়ি ঈদগাহ মাঠে লাকসাম ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মনিরুজ্জামানকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদর্শন করেন। পরে চৌকুড়ি ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হকের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।

লাকসাম ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন বলেন, মনিরুজ্জামানের স্ত্রী তাঁর স্বামীর প্রাপ্য সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ কবির মজুমদার, ইউপি সদস্য জামাল হোসেন, জামাল উদ্দিন, মনিরুজ্জামানের বড় মামা মীর হোসেন, মেজ ভাই তাজ উদ্দিন, ভগ্নিপতি মো. কাইয়ুম, খালাতো ভাই এ এস এম মানিক, ওসমানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

মনিরুজ্জামানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘মেয়েটাকেও দেখতে পারল না মনিরুজ্জামান। এই দুঃখ আমার আজীবন থাকবে। আমার স্বামীর ভিটে ছাড়া কোনো সম্বল নেই। তিনি একটি ঘরও করতে পারেননি। আমার স্বামী ছিলেন আমাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি মারা যাওয়াতে আমি চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছি।’

মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘স্বামীহারা একটা মেয়ের জীবন কাটানো অনেক কষ্টের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন, আমার স্বামী দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আমি চাই, আমার ভবিষ্যৎ যেন সুন্দর হয়।’

আরো পড়ুন : শুধু মে মাসে ১০৭ জন শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *