বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় জামিন দেননি হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রুল শুনানির সময় মির্জা ফখরুলের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, একই মামলার ১১ নম্বর আসামি ছিলেন শাহজাহান ওমর। কিন্তু তিনি জামিন পেয়ে আজ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করেছেন। এদিকে মির্জা ফখরুল এখনো জামিন পাননি।
মির্জা ফখরুলের আইনজীবী আরও বলেন, তিনি তো কোনো চোর-ডাকাত না যে, জামিন পেলেই পালিয়ে যাবেন। শাহজাহান ওমর জামিন পেলে মির্জা ফখরুলও এ মামলায় জামিন পাওয়ার হকদার।
তিনি আরও বলেন, ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে যে হামলা হয়েছে সে সময় মির্জা ফখরুল মঞ্চে ছিলেন। আর মাইকের তারের কানেকশনও ছেঁড়া ছিল। এ হামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কোনোভাবেই জড়িত নন।
জামিন শুনানি শেষে রুলটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এর ফলে জামিন পাচ্ছেন না ফখরুল। রায়ের পর মির্জা ফখরুলের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে কিনা, তা মক্কেলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। তার আগে গত ৩ ডিসেম্বর এই মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এরও আগে ২২ নভেম্বর তার জামিন নামঞ্জুর করেন নিম্ন আদালত।
এর পর জামিন চেয়ে গত ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। আবেদনের শুনানি নিয়ে ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট জামিন প্রশ্নে রুল দেন। মামলায় মির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। রাষ্ট্রপক্ষকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
গত ১৭ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুলের আইনজীবীদের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুল শুনানির জন্য ৩ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। সেদিন মির্জা ফখরুলের আইনজীবীর পক্ষে সময়ের আরজি জানানো হয়। আদালত ওই সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি করে আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ রুলের ওপর শুনানি শেষে তা খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।
আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন। এ সময় মির্জা ফখরুলের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও আইনজীবী কায়সার কামাল উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিএম আবদুর রাফেল।
গত ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পর দিন জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন : নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের ওপরই আস্থা রাখল আওয়ামী লীগ