১ হাজার ৫১টি ট্যুরিজম থেকে সরকারের আয়ের টার্গেট ৮০ হাজার কোটি টাকা

অর্থনীতি প্রচ্ছদ বিনোদন ভ্রমণ শিল্প প্রতিষ্ঠান

দেশের পর্যটন খাত থেকে ২০৪০ সাল নাগাদ ৮০ হাজার কোটি টাকা আয় করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে সারা দেশে ১ হাজার ৫১টি ট্যুরিজম স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ট্যুরিজম স্পটের যোগাযোগ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের কাজও চলমান রয়েছে।

তবে সার্বিকভাবে দেশের পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে হলে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং উদারনীতি গ্রহণের বিকল্প নেই বলে মনে করেন এই খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, দেশে কাক্সিক্ষত হারে বিদেশি পর্যটক আসছেন না। উল্টো দেশ থেকে বিদেশে ঘুরতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় দেশ বাংলাদেশ। যেখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, ম্যানগ্রোভ বন, পাহাড়। কী নেই এখানে। তবে এত কিছুর পরও পর্যটনের বৈশ্বিক সূচকে ১৮৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪১তম। আর এশিয়ার ৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৪২তম। দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে চতুর্থ।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অনেক কিছুই করেছি, কিন্তু পরিকল্পিতভাবে করিনি। অনেক জায়গায় অনেক কাজ হয়েছে। তবে সেগুলো হয়তো মিনিংলেস। আমরা এসব কাজ করার আগে যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি নিইনি। তবে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছু সুবিধা দেওয়া দরকার। কর মওকুফ সুবিধা দেওয়া দরকার। আবার বিদেশি পর্যটক টানার জন্য কিছু পণ্যও লাগবে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, করোনা মহামারি শুরুর আগে ২০১৮ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে গিয়েছিলেন প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি। এর মধ্যে শুধু ভারতেই গিয়েছিলেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। এ ছাড়াও থাইল্যান্ড, দুবাই, মালদ্বীপ, তুরস্কে গিয়েছিলেন প্রায় ১৩ শতাংশ বাংলাদেশি। ভ্রমণ বাবদ এসব দেশে তারা খরচ করেছেন প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় মানুষের ভ্রমণ খরচ বেড়েছে অনেক বেশি। তারা মনে করছে, এই সুযোগটা নিতে পারলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও জিডিপিতে অবদান বাড়াতে পারবে দেশের সম্ভাবনাময় এই পর্যটন খাত।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাপী জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান গড়ে ১০ শতাংশ। সেখানে আমাদের দেশে এ খাতের অবদান ৩ থেকে ৪ শতাংশ। কিন্তু এমন কোনো কারণ নেই যে বাংলাদেশের ট্যুরিজম সেক্টরের প্রসার ঘটবে না। সবগুলো সূচকে বাংলাদেশ আছে। বিশ্বব্যাপী গবেষণায় বলা হচ্ছে, আগামী বিশ্ব ট্যুরিজমের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ থাকবে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের আশপাশের দেশগুলো পর্যটনে বেশ ভালো করছে। আমাদেরও সম্ভাবনা আছে। তবে আমরা নিঃসন্দেহে একটু পিছিয়ে আছি। যদিও এর পেছনে অনেক কারণ আছে। হাজার হাজার বিধিবিধান আমাদের বইয়ে আছে। উদ্যোগ বাস্তবায়নে বা প্রতিফলনে এগুলো প্রতিনিয়ত আমাদের জনগণকে বাধা দেয়। এ জন্য নিয়মনীতিগুলো উদার করা দরকার। ভারসাম্য আনা দরকার।

আরো পড়ুন : ‘মানবতার দেয়াল’গুলোতে এখন আর দেখা যাচ্ছে না মানবতার চিহ্নমাত্র!

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *