গাজীপুর, কালিয়াকৈর ও টঙ্গী প্রতিনিধি: গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজট লেগেই রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে ঘরমুখো হাজার হাজার যাত্রীরা। ভোগান্তি নিয়েই ঈদ-যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট লক্ষ্য করা যায়। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত একই চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর, আশুলিয়ার তৈরি পোশাক কারখানা একসঙ্গে ছুটি হওয়ায় এই দুই মহাসড়ক দিয়ে ঘরে ফেরা যাত্রীরা বিভিন্ন যানবাহনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। একসঙ্গে সবাই সড়কে নেমে আসায় পরিবহণ সংকটসহ দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে এ যানজটের রুপ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সড়কের পাশে যানজট নিয়ন্ত্রণে শত শত পুলিশ কাজ করলেও সামনের দিকে যানবাহন এগুচ্ছে খুবই ধীর গতিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ২৪ কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়েছে কয়েক হাজার যানবাহন। ফলে এসব যানবাহন কখনো স্থবির হয়ে থাকছে, আবার কখনো কয়েক মিনিট চলছে। এতে ১০ মিনিটের রাস্তাও যেতে সময় লাগছে কয়েক ঘণ্টা।
এ যানজটে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিশু ও নারী যাত্রীরা। অপরদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের বাইসপাস মোড় থেকে চন্দ্রা ত্রিমোড় হয়ে করটিয়া পর্যন্ত যানজট লেগে রয়েছে। এ মহাসড়ক কখনো স্থির হয়ে আবার কখনো কয়েক মিনিটের জন্য যানবাহন চলাচল করছে বলে ঘরমুখো যাত্রীরা জানান।
হাইওয়ে পুলিশ, যাত্রী ও চালকরা জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে টঙ্গীর আব্দুল্লাহপুর থেকে শ্রীপুরের মাওনা পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার, সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চন্দ্রা, সফিপুর ও কালিয়াকৈর হয়ে টাঙ্গাইলের গোড়াই, করটিয়া পর্যন্ত প্রায় ২৫কিলোমিটার তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার পর্যাপ্ত গাড়ি না পেয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় কয়েক হাজার যাত্রীকে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যারা গাড়ি পেয়েছেন তারাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, পিকআপে করে গন্তব্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করছেন। আর এই সুযোগে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা অতিরিক্ত কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। তবে মহাসড়কে সকাল হতে পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সফিপুর বাজার এলাকায় কথা হয় আলমগীর হোসেন নামের এক বাসযাত্রীর সাথে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় নারায়নগঞ্জ থেকে ট্রাকে করে রওনা হয়েছি। সকাল ১১টার দিকে সফিপুর বাজারে এসে পৌছালাম। জানি না, গাইবান্ধা কখন পৌঁছাবো।
মতিন সরকার নামের এক যাত্রী বলেন, রাত ১১টায় ঢাকা হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে বের হয়েছি। কিন্তু সারারাত পিকআপেই কেটেছে। চারিদিকে শুধু মানুষ আর গাড়ি।
সালনা হাইওয়ে থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মানুষের চাপ বেড়েছে। যার কারনে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। যমুনা সেতু এলাকায় গাড়ির টান কম থাকায় এ অঞ্চলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ধীরে ধীরে আটকা পড়া যানবাহন চলছে।
আরো পড়ুন : গুলিবিদ্ধ জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মারা গেছেন