জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে ৩ দফা দাবিতে সামিউল ইসলাম প্রত্যয় নামে এক শিক্ষার্থী গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এই কর্মসূচি পালন করছেন এই শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
প্রত্যয়ের দাবিগুলো হলো- গণরুম বিলুপ্তি, মেয়াদ উত্তীর্ণ ছাত্রদের অবিলম্বে হল ত্যাগ, গণরুম-মিনি গণরুমে অবস্থান করা বৈধ ছাত্রদের সিট সুনিশ্চিত করা। গত দেড় বছর ধরে এই দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে ভিসি, প্রক্টর, প্রভোস্টের কাছে কয়েক দফায় লিখিত আবেদন করে আসছিলেন তিনি। এর আগে, নিজের সিটের দাবিতে হলের অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছিল এই শিক্ষার্থী। তখন প্রশাসন ৪৪৭নং রুম বরাদ্দ দেন তাকে।
জানা যায়, মীর মশাররফ হোসেন হলের বি-ব্লকের ৪৪৭নং রুমে থাকতেন প্রত্যয়। এই রুমে ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সবুজ (৪৩ ব্যাচ) অবস্থান করছিলেন। এই সবুজ গত ২৫শে এপ্রিল প্রত্যয়কে রুম থেকে বের করে দেয়।
এরপর ২৬শে এপ্রিল থেকে তিনি এই কর্মসূচি শুরু করেন। সবুজের দাবি, তিনি প্রত্যয়কে বের করেননি। সে নিজেই রুম থেকে বের হয়েছে। প্রত্যয় দাবি করেন, হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এজন্য প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার আবেদনও করেন তিনি। আন্দোলনকারী সামিউল ইসলাম প্রত্যয় বলেন, বিগত দেড় বছর ধরে প্রশাসনকে এই দাবিগুলো জানিয়ে আসছি। কোনো ফল না পাওয়ায় অনশন করতে বাধ্য হয়েছি।
হলের নতুন প্রভোস্ট সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমরা তার দাবিগুলোর সঙ্গে একমত। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার দাবিগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি।’ এদিকে প্রতিবছর অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার জন্য হল প্রশাসন বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তবে সেটা বিজ্ঞপ্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কার্যত হল প্রশাসনকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। জানা যায়, ৪২ ব্যাচের ৪/৫ জন, ৪৩ ব্যাচের ৫০ এর অধিক, ৪৪ ব্যাচের ৬৫ জনের অধিক, ৪৫ ব্যাচের ৫০ জনের অধিক অবৈধ শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করছেন। বর্তমান প্রভোস্ট ওবায়দুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। যেহেতু আমি আমার দায়িত্বের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। আগামী রোববারে নতুন প্রভোস্ট দায়িত্ব বুঝে নেবেন। কাজেই আমি বিষয়টি তার দায়িত্বে দিয়ে দিয়েছি। আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথার্থ ব্যবস্থা নেবে।
প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, আমি তার দাবিগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হলে এমন সমস্যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আশা করছি আমরা খুব শিগগিরই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবো।
আরো পড়ুন : প্রেসিডেন্টের আদেশে পাবিপ্রবি’র ৬ কর্মকর্তার লিফট কিনতে তুরস্ক সফর বাতিল