৪ বছর ধরে ৬০বিঘা জমি অনাবাদি থাকায় অর্ধশতাধিক বর্গাচাষীর মানবেতর জীবন যাপন

ওকে নিউজ স্পেশাল কৃষি প্রচ্ছদ লাইফ স্টাইল হ্যালোআড্ডা

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধায় ৪ বছর ধরে ৬০ বিঘা দুই ফসলী জমিতে চাষাবাদ বন্ধ রয়েছে । অনাবাদী জমিগুলো এখন গবাদী পশুর চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে ঐ জমিগুলির বর্গা চাষ করা অর্ধশতাধিক চাষী পরিবারগুলির চার শতাধিক সদস্যের তিন বেলা ভাত জুটছেনা। চার বছর ধরে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

গাইবান্ধার বোয়ালী ইউনিয়নের খামার বোয়ালী গ্রামে গেলে ভুক্তভোগী বর্গাচাষীরা জানায়, ঐ গ্রামের আব্দুস সবুর, শহীদুল ইসলাম, শাহাবুদ্দীন ও শরিফুল ইসলাম নামের তিন ভাই জমিগুলির মালিক। নিজেদের পারিবারিক কোন্দলের কারণে তাদের পৈতৃক জমিগুলো ভাগাভাগি বন্ধ করে দিয়ে বর্গাচাষীদের চাষাবাদও বন্ধ করে দিয়েছে। এতে পরিবার নিয়ে তারা খাদ্য সংকটে পড়েছে। গবাদি পশুর খাদ্যও মিলছেনা তাদের। বাধ্য হয়ে তারা গরু বাছুর বিক্রি করে দিচ্ছে।

বর্গা চাষী আনছার আলী, নজরুল, আয়নাল, মমতাজ, আবু হোসেন, ফরিদ মিয়া, শহীদুল ইসলাম জানায়, দুই ফসলী জমি গুলিতে আউস ও আমন ধান আবাদ করত তারা। বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৫ মন বর্গার ধান রেখে বাকী ৭ থেকে ১০ মন ধান জমির মালিককে দিত। মালিকরা সবাই বিত্তশালী। কিন্তু তারা সবাই গরীব দিনমজুর ফলে ধান না পাওয়াতে চাল কিনে তিন বেলা খাবার জুটছে না। পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে দিনমজুর বর্গাচাষিরা।

অন্যদিকে জমির মালিক আব্দুস সবুর জানান, তাদের বাবা হাজী সামছুল হক সরকার ২০১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার জীবদ্দশা হতেই জমিগুলোতে বর্গাচাষীরাই চাষাবাদ করে আসছে। আবাদ করতে আগ্রহী নন যে দুই ভাই তাদের একজন বর্তমানে বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম। তিনি এবং অন্য ভাইয়েরা জমি ভাগাভাগিও করছেন না বর্গাচাষিদের চাষাবাদও করতে দিচ্ছে না। বর্গা চাষীদের অভাব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি সমাধানের চেষ্টা করে বিফল হয়েছেন । কিন্তু দুই ভাই ইচ্ছাকৃতভাবে সমাধানে রাজী নন। সরকার ঘোষণা দিয়েছে এক ইঞ্চি জমিও চাষাবাদের বাইরে রাখা যাবে না। সেখানে আমাদের এত বিপুল পরিমাণ জমি অনাবাদী থাকা উচিত নয় বলে আমরা নিজেরাও মনে করি।এ বিষয়ে বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হননি।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফুল আলম বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ কেউ করেনি। জমিগুলো অনাবাদী থাকার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে। গাইবান্ধার কৃষি সম্প্রসারন ভিাগের উপ-পরিচালক মোঃ বেলাল উদ্দিন জানান রাষ্ট্রীয় নির্দেশের প্রেক্ষিতে আবাদী জমি অনাবাদী ফেলে রাখার কোন সুযোগ নেই ষিয়টি দ্রæত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এদিকে এ ব্যাপারে বর্গাচাষীরা এই বিপুল পরিমান অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষন করে লিখিত আবেদন করেছে।

ফারুক হোসেন
গাইবান্ধা।

আরো পড়ুন : অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *