ফ্লাইটে প্রবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় গাফিলতির প্রমাণ; পাইলটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিমান

পুরুষ প্রচ্ছদ প্রবাস ভ্রমণ স্বাস্থ্য কথা হ্যালোআড্ডা

স্টাফ রিপোর্টার : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে এক প্রবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় পাইলটের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। ওই পাইলটের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বুধবার দিলদার আহমেদ তোফায়েল নামের ওই পাইলটকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (প্রশাসন) মো. ছিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, গত ১৫ই জানুয়ারি জেদ্দা থেকে ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩৩৬ ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ছিলেন দিলদার আহমেদ তোফায়েল। ফ্লাইট টেকঅফের পর সৌদি প্রবাসী যাত্রী কবীর আহমেদ অসুস্থতা বোধ করেন। এ সময় কেবিন ইনচার্জ পাইলট ইন কমান্ড হিসেবে দিলদার আহমেদকে বিষয়টি জানান। পরে দিলদার আহমেদ ফ্লাইটে কোনো চিকিৎসক আছেন কিনা এ সম্পর্কে জানতে চান। এরপর ককপিট ত্যাগ করে বিশ্রাম নেয়ার জন্য তিনি বিশ্রাম কক্ষে চলে যান। দিলদারের অনুপস্থিতিতে ফ্লাইটে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) ফ্লাইট অপারেশন্স ইন্সপেক্টর ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান ক্যাপ্টেনের আসনে বসেন।

যা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী একজন লাইসেন্সহীন পাইলট পারেন না। চিঠিতে বলা হয়, ফ্লাইটের যাত্রী ডা. এবিএম হারুন অসুস্থ যাত্রীকে দেখে জানান শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপ হচ্ছে। তাই কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে অবতরণের পরামর্শ দেন। কিন্তু ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে অবতরণ না করে ফ্লাইটটি সরাসরি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করান। যা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। ফ্লাইট অবতরণের পরও দিলদার অসুস্থ যাত্রীকে রেখেই বিমান ত্যাগ করেন। বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর ৫৫ ধারা অনুযায়ী এসব বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, অসদাচরণের শামিল এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এ অবস্থায় দিলদারের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা চিঠি পাওয়ার ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়। অন্যথায় বিধি মোতাবেক তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করে বিমান প্রশাসন।

জানা গেছে, বিমানের যাত্রী কবীর আহমেদ ১৯৯৬ সাল থেকে সৌদি আরবে কাজ করতেন। গত ১৫ই জানুয়ারির ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণের আগেই জরুরিভিত্তিতে এম্বুলেন্স ও মেডিকেল সাপোর্টের জন্য ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জানানো হয়। ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করে ১৬ই জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে। তবে এম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় কবীরকে নামাতে দেরি হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর বিমান থেকে কবীরকে নামিয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকে চুক্তিভিত্তিক ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ তোফায়েলকে আর কোনো ফ্লাইট দেয়া হয়নি।

আরো পড়ুন : গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে সরকারকে বিদায় করা হবে

 

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *