‘বঙ্গবন্ধু ডেকে বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয় কিশোরগঞ্জে থেকে তোকে রাজনীতি করতে হবে’

জনপ্রতিনিধি জাতীয় পুরুষ প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি সফলতার গল্প হ্যালোআড্ডা

জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। শুক্রবার জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণটিই ছিল তার শেষ ভাষণ। এ ভাষণে স্মৃতিচারণ করে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি বলেন- বঙ্গবন্ধুর কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির খবর দিতে গিয়েছিলাম। তখন বঙ্গবন্ধু ডেকে বললেন- ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোর ভর্তি বাতিল’।

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে আমার রাজনীতির হাতেখড়ি। আর তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃপায় আমি রাষ্ট্রপতি হয়েছি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ছাত্র হিসেবে আমি খুব একটা ভালো ছিলাম না। এটি অনেকেরই জানা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ইচ্ছা থাকলেও প্রথমবারে তা হয়নি। পরবর্তী সময়ে খেলোয়াড় কোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি চূড়ান্ত করি। আগ্রহ নিয়ে সাফল্যের খবরটি বঙ্গবন্ধুকে জানাতে তার সঙ্গে দেখা করি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি করার আগ্রহ প্রকাশ করি। আশা ছিল নেতার কাছ থেকে কিছুটা হলেও বাহবা পাব। কিন্তু ফল হলো একেবারে উল্টো।

তিনি আরও বলেন, সব শুনে বঙ্গবন্ধু ভারি গলায় বললেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোর ভর্তি বাতিল। কিশোরগঞ্জে থেকে তোকে রাজনীতি করতে হবে। কাছাকাছি থাকা তোফায়েল ভাইকে ডেকে বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘হামিদকে সেন্ট্রাল ল কলেজে ভর্তি করে বইখাতা দিয়ে কিশোরগঞ্জে পাঠানোর ব্যবস্থা কর।’ আমার জীবনে বঙ্গবন্ধুর কথাই শেষ কথা। সেই থেকে কিশোরগঞ্জকে কেন্দ্র করেই আমার আইন পেশা ও রাজনীতির বিচরণ। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও তা পরিচয় ও আলাপচারিতার মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল। কিশোরগঞ্জই আমার রাজনীতির চারণভূমি।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. আবদুল হামিদের দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২৪ এপ্রিল। পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তিনি। নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

জাতীয় সংসদকে গণতন্ত্র চর্চার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি ও বিরোধী উভয়পক্ষের সংসদ সদস্যদেরকে হিংসা-বিদ্বেষ, ব্যক্তিগত এবং দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসে গঠনমূলক, কার্যকর ও সক্রিয় অংশগ্রহণের তাগিদ দেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ অধিবেশনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদও উপস্থিত ছিলেন। নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সহধর্মিণী রাশিদা খানম অধিবেশন প্রত্যক্ষ করেন।

সংসদে দেওয়া ১৬ পৃষ্ঠার বক্তব্যে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, পৃথিবীর মানচিত্রে একটি আত্মমর্যাদাশীল, দেশপ্রেমিক জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয়কে আমাদের ঐকান্তিকতা, সততা ও কর্মনিষ্ঠা দিয়ে সমুন্নত রাখতে হবে।

আরো পড়ুন : বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছে মির্জা ফখরুল

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *