আতিকুর রহমান নগরী : লাইলাতুল কদর অর্থ অতি সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত বা পবিত্র রজনী। যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্য ও এবাদত-বন্দেগির মধ্যদিয়ে এ রাতে দেশব্যাপী পবিত্র এ রাতটি পালন করা হয়। পবিত্র আল কোরআনের ঘোষণা অনুযায়ী, হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। মহান আল্লাহতায়ালার পবিত্র এ উপহার সমগ্র মানবজাতির জন্য অত্যন্ত বরকতময় ও পুণ্যময় এক রজনী। এ রাতেই মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। তাই লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত অসীম। সমগ্র মুসলিম জাহানেই পবিত্র লাইলাতুল কদর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি রাত। ইসলামী বিশ্বাসে এ রাতে ইবাদতের ফজিলত হাজার মাসের চেয়ে বেশি। অর্থ্যাৎ এ রাতের ইবাদতে হাজার মাসের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। এ রাতে সারা বিশ্বের মুসলমানরা সওয়াব হাসিল ও গুনাহ মাফের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া চায়।
এ রাতকে কেন্দ্র করে ‘আল কদর’ নামে একটি সূরাও অবতীর্ণ হয়। হাদিস অনুযায়ী, ২০ রমজানের পর যেকোনো বেজোড় রাতে কদর হতে পারে। তবে ২৬শে রমজান দিবাগত রাতেই অধিকাংশ মুসলিম লাইলাতুল কদর পালন করে থাকেন।
হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এ সংখ্যা তত্ত্বের দ্বারা এটাই অনুমিত হয় যে, অধিকাংশ বস্তুই আলাহতায়ালা সাতের হিসাব মোতাবেক সৃষ্টি করেছেন। তাই শবেকদর যদি রমজান মোবারকের শেষ ১০ রাতের মধ্যে হয়, তাহলে বর্ণিত বিবরণ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, শবেকদর ২৭ তারিখের রাতেই হবে। পবিত্র কোরআন শরীফের সূরা কদরের আয়াত-সালামুন হিয়া-এর পরবর্তী ‘হিয়া’ শব্দটি সাতাশ অক্ষরের পরে এসেছে। এর দ্বারা বোঝা যায় যে, শবেকদর রমজান মাসের ২৭ তারিখের রাতে হয়ে থাকে (গুনিয়াতুত তালেবিন, পৃষ্ঠা-৩৭৮) শবেকদরের ব্যাপারেও ইমাম আবু হানিফা থেকে একটি তাত্ত্বিক বিষয় বর্ণিত হয়েছে যে, সূরা কদরের মধ্যে আলাহতায়ালা এ রাতকে ‘লাইলাতুল কদর’ বলেছেন। যার মধ্যে হরফ সংখ্যা ৯টি এবং শব্দ দু’টি, আলাহতায়ালা এই সূরায় মোট তিনবার উল্লেখ করেছেন। তাই মোট হরফের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯Í৩ = ২৭। এর জন্য ২৭ তারিখের রাতেই লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শবেকদরের এই রাতকে উপলক্ষ করে সারা দেশের সব মসজিদে মসজিদে ওয়াজ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। আসুন, আমরা সবাই কবরবাসী মা-বাবাসহ আত্মীয়স্বজনদের জন্য দোয়া করি আল্লাহতায়ালা যেন তাদেরকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করেন এবং যারা জীবিত তাদের হায়াতে যেন বরকত দান করেন। আমিন
আরো পড়ুন : গাজীপুরের টঙ্গীতে পলিথিন গুদামে আগুন