আছিয়া বাই। বয়স ৩০ বছর। ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। ভোটের ১২ দিন আগে মারা যান। তবে মৃত্যুর পরও নির্বাচিত হয়েছেন। বলা হচ্ছে, মৃত জেনেও ‘ভালোবেসে’ সমর্থকেরা তাঁকে নির্বাচিত করেন।
বয়সে তরুণ আছিয়া এবারই প্রথম পৌর ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন। চলতি মাসেই এই নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। আছিয়া বাই বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন আছিয়া বাই।
ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হয়ে ভোটের ১২ দিন আগে আছিয়ার মৃত্যু হয়। এরপর স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে জানান তাঁর স্বামী মুনতাজিম কুরেশি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আছিয়ার স্বামীকে জানায়, নির্বাচনের সব আয়োজনই শেষ। এখন শুধু ভোট গ্রহণের পালা। তাই আছিয়ার নামটি ব্যালট থেকে বাদ দেওয়ার কোনো উপায় তাদের কাছে নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গত মঙ্গলবার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভগবান সরণ বলেন, ব্যালট থেকে আছিয়া বাইয়ের নাম বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। তিনি বলেন, একবার নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হলে তা স্থগিত করা যায় না।
নির্বাচন কমিশনের কল্যাণে ব্যালটে আছিয়ার নাম রয়ে যায়। এ অবস্থায় হয় ভোট গ্রহণ। কিন্তু নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর অনেকে চমকে যান। কারণ জানা যায়, আছিয়া বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। বলা হচ্ছে, ভোটারদের মধ্যে আছিয়া যে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন, মৃত্যুর পরও নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি তারই প্রমাণ রেখে গেছেন।
মোহাম্মদ জাকির নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা আছিয়াকে ভোট দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আছিয়া সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারতেন। তাই নির্বাচনের প্রচারণা যখন চলছিল, তখন এখানকার ভোটাররা তাঁকে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। মৃত্যুর পরও তাঁরা সে সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এ জন্যই মারা যাওয়ার পরও আছিয়া জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেন।’
আছিয়ার স্বামী মুনতাজিম কুরেইশি বলেন, আছিয়া তাঁর শান্ত আচরণ দিয়ে ভোটারদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন।
ওই এলাকার আরিফ নামের একজন ভোটার বলেন, ‘তাঁর (আছিয়া) স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতেই আমাদের এই ভোট।’
আরো পড়ুন : কুষ্টিয়ায় জুয়া খেলা নিয়ে সংঘর্ষে প্রাণ গেল ২ জনের