স্টাফ রিপোর্টার: দেশে ডেঙ্গু রোগী শনাক্তে রেকর্ড গড়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত এক লাখ ২ হাজার ১৯১ রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা দেশের পূর্বের সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের ঘটনা ২০১৯ সালকে অতিক্রম করেছে। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ রোগী। বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ১৯৬৫ সালে। তখন এই রোগটি ঢাকা ফিভার নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে রোগটির সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে।
একদিনে আরও ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গত ২১ দিনে মৃত্যু ২৩৪ জন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮৫ জনে। দেশে ইতিমধ্যে ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুতে পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৯৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মোট ভর্তি রোগীর মধ্যে রাজধানীতে ৪৯ হাজার ৩২৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫২ হাজার ৮৬৩ জন। মৃত ৪৮৫ জনের মধ্যে নারী ২৭৭ জন এবং পুরুষ ২০৮ জন। মোট মৃত্যুর মধ্যে ঢাকার বাইরে মারা গেছেন ১২২ জন এবং রাজধানীতে ৩৬৩ জন।
আজ সারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২ হাজার ১৯৭ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৭২ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৩২৫ জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন ২ হাজার ১৯৭ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৬৮৬ জনে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩ হাজার ৬০৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪ হাজার ৭৯ জন। চলতি বছরের এ পর্যন্ত এক লাখ ২ হাজার ১৯১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি রোগীর মধ্যে পুরুষ আক্রান্ত ৬৩ হাজার ৭৪৮ জন এবং নারী ৩৮ হাজার ৪৪৩ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৪ হাজার ২০ জন।
অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন, মার্চে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১১ জন এবং এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৩ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। জুলাইতে শনাক্ত ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন এবং মারা গেছেন ২০৪ জন। আগস্টের ২১ দিনে ৫০ হাজার ৩৫৯ জন শনাক্ত এবং প্রাণহানি ২৩৪ জনের। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি হবে। কারণ অনেক ডেঙ্গু রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন, তাদের হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খাতায় নেই।
উল্লেখ্য, দেশে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত ঘটনা ঘটেছিল ২০১৯ সালে। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ রোগী এবং মারা যান ১৬৪ জন। বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ১৯৬৫ সালে। তখন এই রোগটি ঢাকা ফিভার নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে রোগটির সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। ২০০০ সালে দেশে ডেঙ্গু শনাক্ত হলেও ২০২২ সালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ ছিল। সেই বছরে দেশে সর্বোচ্চ মারা যায় ২৮১ জন। তখন এটাই ছিল সর্বোচ্চ প্রাণহানি। আর চলতি বছরে দেশে গত ৩রা আগস্ট মৃত্যুর সেই রেকর্ড অতিক্রম করে।
আরো পড়ুন : ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের কক্ষ থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার