স্টাফ রিপোর্টার : স্যালাইন সংকটের কারণে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু, সার্জারি, ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন রোগীকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো তীব্র স্যালাইন সংকটে ভুগছে। তবে সমপ্রতি দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্যালাইন সংকট কাটলেও বেসরকারি হাসপাতালে সংকট এখনো কাটেনি। সংকট সমাধানে ৭ লাখ স্যালাইন আমদানির অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এদিকে, সরবরাহ সংকটের কারণে স্যালাইনের দামও বেড়ে গেছে দুই থেকে তিন গুণ।
সংকট মেটাতে বাজার মনিটরিংয়ের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে স্যালাইন আমদানি করা হলে এ সপ্তাহে সংকট কেটে যাবে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ডেঙ্গু রোগীর একজন স্বজন জানান. ধানমণ্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে তার রোগী। রোগীর জন্য স্যালাইন দরকার। সব ফার্মেসিতে ঠিকমতো স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকটি ফার্মেসি খুঁজে ৯০ টাকার স্যালাইন ২০০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে তাকে।
রাজধানীর হাজারীবাগ সেকশনস্থ বিক্রমপুর ফার্মেসির বিক্রয় প্রতিনিধি নাজমুল হাসান মানবজমিনকে বলেন, স্যালাইনের সংকট রয়েছে। বাজারে চাহিদা বেশি।
বিজ্ঞাপন
তাদের দোকানে এই মুহূর্তে স্যালাইন নেই। সরবরাহকারীরা ঠিকমতো স্যালাইন সরবরাহ করছে না। তিনি জানান, তাদের আশেপাশে ৯০ টাকার স্যালাইন ২০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এম এইচ লেলিন চৌধুরী বলেন, এখন চাহিদার তুলনায় স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা কোম্পানিকে ১০০ ব্যাগ স্যালাইনের চাহিদা দিলে ১০ বা ২০ ব্যাগ স্যালাইন পাই। আগে আমরা একজন লোক পাঠিয়ে মিডফোর্ড মার্কেট থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী স্যালাইন নিতে পারতাম। এখন স্যালাইনের খোঁজে তিন চারজনকে মিডফোর্ড মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে পাঠাতে হচ্ছে। স্যালাইনের সর্বোচ্চ দাম ৯০ থেকে ৯৫ টাকা ছিল, এখন সেই স্যালাইন আমরা ২০০ টাকা প্যাকেট কিনছি। আমাদের ফার্মেসিতে স্যালাইন না থাকায় রোগীদের আমরা লিস্ট ধরিয়ে দিচ্ছি, তারা বিভিন্ন দোকান খুঁজে খুঁজে স্যালাইন কিনছে। সংকটের কারণে দাম বাড়ায় একদিকে রোগীদের চিকিৎসা খরচ যেমন বেড়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি ভোগান্তিও বাড়ছে।
চিকিৎসকরা জানান, সাধারণ স্যালাইন শুধু ডেঙ্গুই না সিজার, সার্জারি, ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইনের সংকটে অন্যান্য রোগের চিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছে। স্যালাইনের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং এর দাম বাড়াতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে বাজার মনিটরিংয়ের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ ও ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপ-পরিচালক (আইন কর্মকর্তা) মো. নুরুল আলম বলেন, ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইনের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। এজন্য দ্রুত ইডিসিএলের (রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি) মাধ্যমে ৭ লাখ স্যালাইন ভারত থেকে আমদানি করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলো তিন শিফটে স্যালাইন উৎপাদন করছে। পাশাপাশি স্যালাইন আমদানির এই অনুমতি দেয়া হলো। দুই/একদিনের মধ্যে আমদানিকৃত স্যালাইন চলে আসলে সংকট কেটে যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন : আজ হাসিনা-মোদি বৈঠক, হচ্ছে তিন সমঝোতা স্মারক সই ও দুই প্রকল্পের উদ্বোধন