সাতক্ষীরা প্রতিনিধে: সাতক্ষীরার চাঞ্চল্যকর শিশু অর্ণব দাস ওরফে বাবু দাস হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মুকুল গাজীকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬। রোববার যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বাগাআঁচড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২২ বছর পালিয়ে থাকার পর তাঁকে গ্রেপ্তারে করে র্যাব।
গ্রেপ্তার মুকুল গাজী আশাশুনি উপজেলার খলিয়ানি গ্রামের আবু দাউদ গাজীর ছেলে। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০০ সালের ১৮ জুন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার সাঁইহাটি গ্রামের বিমল দাসের ছেলে অর্ণব দাসকে (৮) টিয়া পাখি দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে যায় মুকুল গাজী। তিন দিন পর বাড়ির পাশে একটি নর্দমার ভেতর এক হাত কাটা ও দুই চোখ উপড়ানো অবস্থায় অর্ণবের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অর্ণবের কাকা নিশান দাস বাদী হয়ে ২২ জুন কালীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) খুলনা কার্যালয়ের তৎকালীন উপপরিদর্শক খসরুল হক আশাশুনি উপজেলার গোদাড়া গ্রামের আবদুস ছাত্তার সরদার, তাঁর ছেলে খলিলুর রহমান, চাম্পাফুল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, তাঁর ভাতিজা ফারুক হোসেন, সুশীল দফাদার ও মুকুল গাজীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০০৭ সালে সাতক্ষীরা জজ আদালত এই মামলার রায়ে আসামি খলিলুর রহমান ও গোলাম ফারুককে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করে। ২০১০ সালে ২৪ আগস্ট বিচারপতি মো. আবু তারিক ও বিচারপতি মো. আব্দুল হাইয়ের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের যৌথ বেঞ্চ অর্ণব হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি খলিলুর রহমান, গোলাম ফারুকসহ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবদুস ছাত্তার সরদার, মতিয়ার রহমান ও সুশীল কুমার রায়কে খালাস দেওয়া হয়। অপর আসামি মুকুল গাজীর যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখা হয়। তবে তিনি পলাতক ছিলেন।
র্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার ও সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুল হক জানান, অর্ণব হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মুকুল গাজীকে আজ ভোরে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগাআঁচড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আশাশুনি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার জানান, যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া মুকুল গাজীকে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরো পড়ুন : চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে এপর্যন্ত মৃত্যু ৬০, আক্রান্ত ৬ হাজার ৯২৬ জন