ডিজিটাল জরিপ ছাড়া পুরোনো পদ্ধতিতে করা ভূমি জরিপ বাতিল

ওকে নিউজ স্পেশাল জনদুর্ভোগ জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি প্রচ্ছদ মুক্তমত হ্যালোআড্ডা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ডিজিটাল জরিপ ছাড়া পুরোনো পদ্ধতিতে দেশে যে ভূমি জরিপ চলছে, তা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর ইতিমধ্যে যেসব জরিপ হয়েছে, সেগুলো বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল’ নিয়ে আলোচনার সময় ভূমিমন্ত্রী এ কথা জানান।

ভূমি জরিপ নিয়ে মানুষ চরম অসন্তোষ প্রকাশ করছেন উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমি আজকেই নির্দেশনা দিয়েছি, দেশে ডিজিটাল জরিপ ছাড়া যে সমস্ত জরিপ হচ্ছে, আগের স্টাইলে, সমস্ত জরিপ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য এবং ইতিমধ্যে যে জরিপ হয়েছে, এগুলো বাতিল হিসাবে গণ্য হবে। কারণ, এত কষ্ট করছি যদি দুর্নামের ভাগী হয়ে থাকি, তাহলে তা নিরর্থক। সুতরাং যেসব জরিপ হচ্ছে, সব বন্ধ। ডিজিটাল সার্ভে পর্যায়ক্রমে হবে, এগুলো আসবে। আর ইতিমধ্যে যে সমস্ত জরিপ হয়েছে, সব বাতিল। এটা আমি আপনাদের সংসদে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত করতে চাই।’

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে। এতে আমরা হাত দিয়েছি। পাইলটিং প্রকল্প নিয়েছি পটুয়াখালী ও বরগুনাতে। কিছু কিছু জায়গায় জরিপ হচ্ছে এবং আমার কাছে অভিযোগ এসেছে, এমনকি আমার এলাকায়ও হচ্ছে। মানুষ চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’

এর আগে গত রোববার জাতীয় সংসদে ভূমির একটি বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে ভূমি জরিপ ও মৌজা মূল্য নির্ধারণে অনিয়ম নিয়ে জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিরোধী দলের একাধিক সংসদ সদস্য। তাঁদের মধ্যে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেছিলেন, ‘ভূমির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নয়ছয় করে, কাগজ নাই, এটা নাই, ওইটা নাই বলে টাকা নেন। সাধারণ মানুষ কোনো প্রতিকার পান না।’

জমির মিথ্যা দলিলে সাত বছরের কারাদণ্ড

জমির মিথ্যা দলিল করলে হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। বৈধ দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি কোনো ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। এসব বিধান রেখে গতকাল ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল–২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে দলিলের কোনো অংশ কাটা বা পরিবর্তন করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করা, প্রতারণামূলক কোনো ব্যক্তিকে কোনো দলিলে সই বা পরিবর্তনে বাধ্য করার ক্ষেত্রেও একই সাজা খাটতে হবে। ভূমি হস্তান্তর, জরিপ ও রেকর্ড হালনাগাদে অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার, তথ্য গোপন করে কোনো ভূমির সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ কারও কাছে হস্তান্তর, ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে জমি হস্তান্তর ও মিথ্যা বিবরণসংবলিত কোনো দলিলে স্বাক্ষর করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।

বিলে বলা হয়েছে, হালনাগাদকৃত সর্বশেষ খতিয়ান মালিক বা তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রে বা হস্তান্তর বা দখলের উদ্দেশ্যে আইনানুগভাবে সম্পাদিত দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে কোনো মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি ওই ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। অবৈধ দখলের সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।

বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া আবাদযোগ্য জমির উপরিস্থিত স্তর কাটলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।

এ ছাড়া ১৯৮৪ সালের ল্যান্ড রিফর্মস অর্ডিন্যান্স রহিত করে ‘ভূমি সংস্কার বিল’ পাস হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, ৬০ প্রমিত বিঘার বেশি কৃষি ভূমির মালিক বা তার পরিবার হস্তান্তর, উত্তরাধিকার, দান বা অন্য কোনো উপায়ে নতুন কোনো কৃষি ভূমি অর্জন করতে পারবে না। তবে আটটি ক্ষেত্রে এটি শিথিল থাকবে।

আরো পড়ুন : বাংলাদেশে প্রথম সফল পরীক্ষা হলো ‘হাইব্রিড রকেট ইঞ্জিনের’

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *