‘তৃণমূল বিএনপি’র ‘চেয়ারপার্সন’ শমসের মবিনকে নিয়ে সিলেটে নানা আলোচনা

প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

কাওছার আহমদ, সিলেট: নতন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ‘তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপার্সন শমসের মবিন চৌধুরীকে নিয়ে সিলেটে চলছে নানা আলোচনা। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে তৃণমূল বিএনপির প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হলে জন্ম দেয় এ আলোচনার। এর আগে তিনি বিএনপি ও বিকল্প ধারার রাজনীতি করেছেন।

শমসের মবিন চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জে। রাজনীতিতে শমসের মবিন চৌধুরীর উত্থানটা ছিল বেশ নাটকীয়। তিনি চাকরী থেকে অবসরে গিয়ে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন এবং ২০০৯ সালে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হন। এরপর ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ালে হতবাক হন সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীরা। তখন ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা তাঁকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেন। পরবর্তিতে ২০১৮ সালের অক্টোবরে বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দিয়ে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এরপর রহস্যজনকভাবে নিষ্ক্রীয় ছিলেন দীর্ঘ দিন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আবার রাজনীতির মঞ্চে সক্রিয় হলে সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা কৌতুহল সৃষ্টি করে। সিলেট জেলা বিএনপির প্রথম সহ সভাপতি মামুনুর রশীদ (চাকসু মামুন) বলেন, শমসের মবিন চৌধুরী হলেন একজন সুবিধাবাদী ব্যক্তি। আবার কোন সুবিধায় সক্রিয় হয়েছেন আল্লাহ জানে। তবে সিলেটে এদের মতো ডিগবাজিদের অবস্থান নেই।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, তিনি ছিলেন একজন কূটনীতিক এবং সেনা অফিসার। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি পররাষ্ট্র্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর জোট সরকারের আমলে তাকে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতও নিয়োগ করা হয়। চাকরি থেকে অবসরে গিয়ে বিএনপিতে যোগ দিলে দলের হাইকমান্ড তাঁকে বিশ^াস করে ভাইস চেয়ারম্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব দেন। কিন্তু তিনি সেই বিশ^াস রাখতে পারেননি।

তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান করেই দলটির শীর্ষ নেতৃত্বে চলে এলেন বিএনপির সাবেক দুই নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকার।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তৃণমূল বিএনপির কাউন্সিলে আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন কাউন্সিলের সঞ্চালক ও দলের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মো. আক্কাস আলী খান। ২৭ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক জাতীয় নির্বাহী কমিটি নির্বাচন করা হয়। এ কমিটিতে শমসের মবিন চৌধুরীকে চেয়ারপার্সন ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা (বহিষ্কৃত) অ্যাডভোকেট তৈমুর আলী খন্দকারকে মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়।

এছাড়া দলের প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হুদার মেয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্তরা সেলিমা হুদা নতুন কমিটিতে এক্সিকিউটিভ চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন মো. আক্কাস আলী খান।

ভাইস চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন কে এ জাহাঙ্গীর মজুমদার, মেজর (অব.) ডা. হাবিবুর রহমান, মোখলেসুর রহমান ফরহাদী, দীপক কুমার পালিত, মেনোয়াল সরকার ও ছালাম মাহমুদ।

যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান, ফয়েজ চৌধুরী, তালুকদার জহিরুল হক, রোখসানা আমিন সুরমা। কোষাধ্যক্ষ (ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদা) নির্বাচিত হয়েছেন শামীম আহসান। সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শাহজাহান সিরাজ (বরিশাল), আকবর খান (চট্রগ্রাম)।

এ ছাড়া সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল মোড়ল, দপ্তর সম্পাদক হিসেবে একে সাইদুর রহমান ও মো. রাজু মিয়া, মুক্তি যুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কাজী ইব্রাহীম খলিল সবুজ, যুব বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে শাহাবউদ্দিন ইকবাল, আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে অ্যাডভোকেট আশানুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক স্থপতি নাজমুস সাকিব, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে সাগর ঘোষ এবং স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে ফরহাদ হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন।

কাওছার আহমদ

আরো পড়ুন : বাগেরহাটে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ৬৫বছরের বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *