স্টাফ রিপোর্টার : ড. ইউনূসকে তলব করেছে দুদক। আগামীকাল ৫ই অক্টোবর সশরীরে দুদকে হাজির হতে বলেছে ড. ইউনূসকে। ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আজ ৪ঠা ও আগামীকাল ৫ই অক্টোবর ড. ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের ৭ জনকে তলব করা হয়েছে। ড. ইউনূসকে ৫ই অক্টোবর হাজির হতে বলেছে।
ড. ইউনূস ছাড়াও অন্য যাদের তলব করা হয়েছে- তারা হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম (৫০), সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান (৬৩), পরিচালক পারভীন মাহমুদ (৬২), নাজনীন সুলতানা (৬১), মো. শাহজাহান (৬৫), নূরজাহান বেগম (৭২) ও এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী (৬২)। এদের মধ্যে প্রথম তিন জনকে আজ ৪ঠা অক্টোবর এবং পরের পাঁচ জনকে ৫ই অক্টোবর হাজির হতে বলা হয়েছে।
এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করেছেন বলে ড. ইউনূসকে ডেকেছেন। আসা না আসা সেটা তার ব্যাপার। সাংবাদিকদের দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি কমিশনের কাজ নয়। কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় মামলা হবে কি, হবে না। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে, এখন তদন্ত কর্মকর্তা ঠিক করবেন কাকে তিনি ডাকবেন। তিনি যাকে প্রয়োজন মনে করবেন তাকেই ডাকবেন।
এটা তার নিজস্ব বিষয়। তলবের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আমি জেনেছি। তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করেছেন তাই তাকে ডেকেছেন। আসলে ভালো, না আসলে সেটা তার ব্যাপার। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি করা হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তাকে হয়রানি কেন করা হবে? শ্রমিকদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে কারখানা পরিদপ্তর থেকে তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে দুদক তদন্ত করেছে এবং মামলা হয়েছে। এটাকে হয়রানি কেন বলছেন? সংস্থার উপ-পরিচালক ও মামলার বাদী গুলশান আনোয়ার প্রধান জানান, মামলার ১৩ আসামির মধ্যে প্রথম ৮ জনকে তলব করা হয়েছে। এর আগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন দুদকের তলবের বিষয়টি শ্রম আদালতে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও এডভোকেট মিজানূর রহমান। আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন মানবজমিনকে বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৮ আসামিকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদের মধ্যে ৪ জনকে আজ বুধবার এবং কাল বৃহস্পতিবার ড. ইউনূসসহ ৪ জনকে সশরীরে দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, দুদক যদি কোনো কারণে তারিখ পরিবর্তন না করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুদকে হাজির হবেন। এ ছাড়া বুধবার যাদেরকে যেতে চিঠি দিয়েছেন, তারা সকাল সাড়ে ৯টায় যাবেন। তিনি আরও বলেন, অন্য মামলায় সাজা দিতে পারবে না বলে তড়িঘড়ি করে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা দেয়া হয়েছে।
গত ২৭শে সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদসহ ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে ২৫.২২ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। আগামী ৫ই অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টায় উপর্যুক্ত বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তদন্তকার্যে সহযোগিতা করতে আপনাকে অনুরোধ করা হলো।
গত ৩০শে মে গ্রামীণ টেলিকম থেকে শ্রমিক-কর্মচারীদের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার।
আরো পড়ুন : বয়স ৮০’র উপরে, সময় হয়ে গেছে এত কান্নাকাটি করে তো লাভ নেই