নিজস্ব প্রতিবেদক, মুন্সীগঞ্জ ও ফরিদপুর প্রতিনিধি : স্বপ্নের পদ্মা সেতু ছিল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। সেই স্বপ্নের রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি উৎসব আর আনন্দে ভাসছে এ অঞ্চলের মানুষ। স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে সড়কের পরে এবার খুলল রেলপথ। আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো দেশের দক্ষিণের মানুষের। বলা যায়, দক্ষিণে রেলগাড়ির শুভ প্রবেশ ঘটল। পদ্মা সেতুতে বাস চলাচল উদ্বোধনের এক বছরের বেশি সময় পর ট্রেন চলাচল শুরু। গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ডিজিটাল সুইচ টিপে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। দুপুর ১২টা ৫২ মিনিটে ট্রেনের টিকিট কাটেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশের আরেকটি কাউন্টারে একই সময়ে টিকিট কাটেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। তাঁদের পরিবারের শিশু সদস্যদের জন্য টিকিট সংগ্রহ করেন। টিকিট সংগ্রহের পর প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের উপস্থিত সদস্যদের সেখানে টিকিট দেখাতে দেখা যায়। দুপুর ১২টা ৫৪ মিনিটে সবুজ পতাকা দুলিয়ে এ ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর তিনি ট্রেনে ওঠেন। দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে ট্রেনটি মাওয়া স্টেশন থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন। বেলা ২টার দিকে ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছায় দক্ষিণের মানুষের স্বপ্নের ট্রেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, ইমাম, বিভিন্ন পেশাজীবী, সরকারি চাকরিজীবী, রিকশাচালক, সবজি বিক্রেতা, দিনমজুর থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীসহ প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন। ট্রেনে উঠে আসনে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মোনাজাত করতে দেখা যায়। এ সময় তিনি দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান। ট্রেনের প্রথম কামরায় ওঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সিনিয়র সচিবসহ ভিআইপিরা। দ্বিতীয় কামরায় বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, সিনিয়র সাংবাদিক ও প্রধানমন্ত্রীর নিয়মিত সংবাদ সংগ্রহকারী কয়েকজন সংবাদকর্মী। প্রথম ও দ্বিতীয় কামরায় ঘুরে ঘুরে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবার সঙ্গে তিনি ছবিও তোলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে মনে করিয়ে দেন, তিনি পদ্মাপাড়ের মেয়ে হিসেবে এসেছেন যাত্রীদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করতে। সফরসঙ্গীরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। মাওয়া থেকে ভাঙ্গাগামী ১৪ বগিবিশিষ্ট বিশেষ ট্রেন শেখ হাসিনাকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতু পার হয়। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উদ্বোধনী ট্রেনটিও সাজানো হয়েছে রঙ-বেরঙের ফেস্টুন ও ফুলে।
আরো পড়ুন : ১১ অক্টোবর ২০২৩, বুধবারে নামাজের সময়সূচি