স্টাফ রিপোর্টার : প্রেমের ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়সহ সর্বস্ব লুটে নিতো চক্রটি। সম্প্রতি একটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ১ জন পুরুষ। তারা প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাসায় ডেকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে। মঙ্গলবার মিরপুর মডেল থানার ২ নম্বর সেকশন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন, খাদিজা, মো. হাদিউল ইসলাম বাবু, মুনমুন, ওয়াসফিয়া খানম।
এই চক্রে বাবু, মুনমুন এবং ওয়াসফিয়া তাদের ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর দিয়ে চক্রের নাম রাখেন বিএমডব্লিউ। তারা বিএমডব্লিউ নামেই পরিচিত। মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন মানবজমিনকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাবু পেশায় একজন ব্যবসায়ী। খাদিজা ও মুনমুন গৃহিণী এবং ওয়াসফিয়া একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ শিক্ষার্থী। ওয়াসফিয়া এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড।
তারা প্রথমে একজনকে টার্গেট করে। যাকে টার্গেট করা হয় তার সঙ্গে অনলাইনে অথবা অফলাইনে বন্ধুত্ব করা হয়। অফলাইনে তারা আর্থিক সহযোগিতার নামে পরিচিত হন। যেহেতু বিকাশের মাধ্যমে সহযোগিতা করে, তাই মোবাইল নম্বর রেখে দেন। এরপর সেই নম্বরে নিয়মিত যোগাযোগ করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে। এক পর্যায়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে বাসায় ডেকে আনে। বাসায় আসার পরপরই চক্রের বাকি সদস্যরা মারধর শুরু করে। পরে টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
এ সময় মেয়ে সদস্যরা ওই ভুক্তভোগী ব্যক্তির সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তোলে। এরপর সেই ছবি ভুক্তভোগীর স্ত্রী কিংবা পরিবারের কাছে পাঠিয়ে বড় অংকের টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেয়। উপায় না দেখে এবং সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়ে টাকা দিয়ে দেন। এই একই কায়দায় দেড় মাস আগে এক এনজিও কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন এই চক্রের সদস্য খাদিজা। বাবা অসুস্থ বলে তিনি এই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রথমে ২০০ টাকা নেন। এই টাকা নেয়ার মাধ্যমেই পরিচিত হন। এরপর বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে সম্পর্ক গভীর করেন। এক পর্যায়ে গত মঙ্গলবার তাকে বাসায় ডাকেন খাদিজা। বাসায় আগে থেকেই ছিলেন বাবু, মুনমুন, ওয়াসফিয়া। ভুক্তভোগী এনজিও কর্মী বাসায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বেঁধে মারধর শুরু করে তারা। পরে মোবাইল ও নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এরপর তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। শেষে ১০ হাজার ২০০ টাকায় রফা করেন। টাকা নিয়ে রাতে তাকে ছেড়ে দিতে এলে এনজিও কর্মী চিৎকার শুরু করেন। এ সময় আশপাশের লোক এসে প্রতারক চক্রটিকে আটক করেন। পরে পুলিশ গিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
আরো পড়ুন : ময়মনসিংহ ও মানিকগঞ্জের সড়কে ঝরলো ১১ প্রাণ