ঢাকায় লাখো ইমামের সম্মেলন করতে যাচ্ছে সরকার

ওকে নিউজ স্পেশাল জাতীয় ধর্ম পুরুষ প্রচ্ছদ বিনোদন মুক্তমত লাইফ স্টাইল শিক্ষা সফলতার গল্প হ্যালোআড্ডা

ডয়চে ভেলে: ঢাকায় এক লাখ ইমামের সমাবেশ ঘটিয়ে ইমাম সম্মেলন করতে যাচ্ছে সরকার। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পূর্বাচল বাণিজ্যমেলা মাঠে ৩০ অক্টোবর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পূর্বাচল বাণিজ্যমেলা মাঠে ৩০ অক্টোবর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ডয়চে ভেলেকে নিশ্চিত করেছেন ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমির পরিচালক মাওলানা আনিসুজ্জামান শিকদার।

তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবছর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের নিয়ে সম্মেলন করা হয়। সেই ধারাবাকিতায়ই এবারও সম্মেলন করা হচ্ছে। তবে এবার একটু বড় আয়োজন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন। মক্কা ও মদিনা মসজিদের দুই ইমামকেও অতিথি হিসেবে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। সারাদেশ থেকে এক লাখ ইমাম এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবে বলে জানান আনিসুজ্জামান শিকদার।

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। তাই এই সময়ে ইমাম সম্মেলন করার মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখতে পাচ্ছেন জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি ও লালমাটিয়া বায়তুল হারাম মসজিদের ইমাম মাওলানা কাজী আবু হোরায়রা। তিনি বলেন, ‘‘সরকার নিজের ভোটের জন্য এই ইমাম সম্মেলন করছে। আমরা ওই সম্মেলনের কথা শুনেছি তবে আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।”

এর জবাবে মাওলানা আনিসুজ্জামান শিকদার বলেন, ‘‘এই সম্মেলনের পিছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নাই। প্রতিবছরই এই সম্মেলন করা হয়। এর উদ্দেশ্য থাকে ইসলামের মহান আদর্শ সবার কাছে পৌঁছে দেয়া।”

তিনি বলেন, ‘‘আমরা এ পর্যন্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে দুই লাখ ৫০ হাজার ইমামকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাদের উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা হয়। সেখানে যারা প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হন তাদের প্রত্যেক বছর জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে পুরস্কার দেয়া হয়। প্রত্যেক বছর প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়েই তারা পুরস্কার নেন। এবারও তাই করা হচ্ছে। তবে এবার একটু বড় আকারে করা হচ্ছে।”

এই সম্মেলনে যারা আসবেন তাদের প্রায় সবাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম। প্রশিক্ষণ পাননি এমন ইমামরাও থাকবেন। তবে তা শতকরা ২০ ভাগের বেশি হবে না বলে জানান। এছাড়া সরকার সারাদেশে যে ৫০টি মডেল মসজিদ করেছে তার ইমামরাও সম্মেলনে থাকবেন।

জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা কাজী আবু হোরায়রা বলেন,‘‘ সরকার কোটি কোটি টাকা বাজেট করেছে এই সম্মেলনের জন্য । এই সম্মেলন লোক দেখানো, যে মৌলভী সাহেবরা আমাদের সঙ্গে আছে। ”

তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের সম্মেলন সরকারই করবে। তবে আমাদের ডেকে আলাপ আলোচনা করতে পারতো। এখন এটা করা হচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যারা চাকরি করে, গণশিক্ষা করে, ওনাদের নিয়ে আসবে আরকি। তারা গণশিক্ষার চাকরি করে। তারা না আসলে তো চাকরিতে রাখবে না। মডেল মসজিদের ইমামরা আছেন। তারা আসবেন, খাবেন, সরকারের টাকা নিয়ে যাবেন। সরকার সরকারের কথা বলবে। ”

তার কথা, ‘‘তারপরও ইমামরা কি আর সরকারের কথায় ভোট দেবে? তারা দরবারি ইমাম হলেও সরকারের কথায় ভোট দেবে না। উপরে দিয়ে দেখাকে, কিন্তু ভোট দেবেনা। আলেম ওলামারা কি সব জায়গায় ভোট দেয়?”

তিনি জানান, সারাদেশে এখন চার লাখেরও বেশি মসজিদ আছে। এই সব মসজিদে ইমাম মেয়াজ্জিম মিলে ১০ লাখ মাওলানা আছেন। তাদের সংগঠনের সদস্য সংখ্যা এক লাখেরও বেশি।

ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির পরিচালক মাওলানা আনিসুজ্জামান শিকদার এর জবাবে বলেন,‘‘ আমরা মাওলানা আবু হোরায়রা সাহেবকে ভিন্ন কারণে সম্মেলনে দাওয়াত দিতে পারছি না। তবে তিনি যেসব অভিযোগ তুলেছেন তা সত্য নয়।”

তার কথা, ‘‘সামনে নির্বাচন বা সরকারের পক্ষে ভোট চাওয়ার সঙ্গে ইমাম সম্মেলনের কোনো সম্পর্ক নেই। এই সম্মেলনে প্রতিবছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থাকেন। এবারও থাকবে ন।”

এদিকে পূর্বাচলে এই ইমাম সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়ে গেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা সম্মেলনের মাঠ পরিদর্শন করেন।

(জার্মানি সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বাংলা সংস্করণের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটি তৈরি)

আরো পড়ুন : বিএনপি’র ডাকে ‘অলআউট’ কর্মসূচিতে যেতে পারে সরকার বিরোধী শিবির

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *