একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ আপনারাই খুলে দিন

জনপ্রতিনিধি তথ্য-প্রযুক্তি পুরুষ প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, সরকারকে অনুরোধ করব এই হিংসাত্মক মারাত্মক পথ থেকে সরে আসুন। একটি শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় আপনারা একটি সমঝোতায় গিয়ে সরকার থেকে সরে দাঁড়ান। একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ আপনারা নিজেরাই খুলে দিন।

এটা শুধু আপনাদের জন্যই মঙ্গলজনক হবে না, দেশের জন্যও মঙ্গলজনক হবে। এ দেশের মানুষ তাদের যে ভোটের অধিকার, তাদের যে মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার সেটা যেন ফিরে পান।

যদি এই শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেন, আওয়ামী লীগ পুনরায় সরকার গঠন করবে। তাদের তো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তারা (সরকার) তো দাবি করছে উন্নয়ন করছে, তাহলে দেশের মানুষকে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মুখোমুখি করতে তাদের এত ভয় কেন। আমি পুনরায় এই অনুরোধ করব সরকার যেন একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে এগিয়ে আসুক। সোমবার রাতে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

আব্দুল মঈন খান বলেন, সরকার ভাবছে বিরোধী দলকে তফশিলের ঘোষণা দিয়ে কাবু করবে। আসলে এটা একটি দুরাশামাত্র। আমরা বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের তফশিল ঘোষণার উদাহরণ অনেক দেখেছি। তফশিল ঘোষণার পরে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তিত হয়েছে, সেই উদাহরণও অনেক দেখেছি। শুধু তাই নয়, তফশিল ঘোষণার পরে যে নির্বাচন ঘোষণা করেছে সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে বাতিল হয়েছে-সে উদাহরণও আমরা দেখেছি। কাজেই তফশিল ঘোষণার হুমকি দিয়ে দেশের বিরোধীদল দূরে রেখে দেশের মানুষকে কাবু করতে পারবে না। মানুষ গণতন্ত্রের আন্দোলনে নেমেছে, গণতন্ত্র আমরা অর্জন করব।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সিনিয়র সদস্য আরও বলেন, আজকে রাজনীতিক যে পরিস্থিতি হয়েছে হঠাৎ করেই, সেটা কিন্তু সরকারের সৃষ্টি। আমরা দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে সারা বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। প্রথমে বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে পরবর্তীতে জেলা ও উপজেলায়। এমনকি একই দিনে প্রায় ৬ হাজার ইউনিয়নে কর্মসূচি পালন করেছি। পদযাত্রা করেছি, সভা-সমাবেশ করেছি। লাখ লাখ মানুষ একেকটি সভায় অংশগ্রহণ করেছে। সব কিছু মিলিয়ে দেখলে কোটি কোটি মানুষ আমাদের দাবির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। দাবিটি হচ্ছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। যে গনতন্ত্রের জন্য একদিন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল।

তিনি বলেন, কিন্তু আমরা কি দেখলাম ২৮ অক্টোবর। হঠাৎ করে সেদিন দেশের রাজনীতির দৃশ্যপট বদলে গেল। আমাদের একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার হামলা করল। তার পর শুরু হলো টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ। সরকার ভেবেছিল এ ধরনের ভয়ভীতি-সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বিরোধী দলকে স্তব্ধ করে দেবে। কিন্তু চলমান কর্মসূচিতে দেশের মানুষ থেমে নেই।

বিএনপির যারা সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতা তাদেরকে রাতের আঁধারে গ্রেফতার করেছে। একটা সভ্য দেশে এটা কি হতে পারে? তাদেরকে মিথ্যা গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে সেসব অভিযোগের রহস্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও, স্থিরচিত্র ও বিভিন্ন কথোপকথনের রেকর্ড সরকারপক্ষের ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।

সুতরাং উস্কানির মাধ্যমে একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এই অশান্তকর পরিবেশের দায়-দায়িত্ব বিরোধী দলের ওপর, বিএনপির ওপরে চাপিয়ে দেবে সরকার, তাদের এই পরিকল্পনা সব ব্যর্থ হয়েছে।

মঈন খান বলেন, আজকে দেশের মানুষ ইচ্ছায়, স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজপথে নেমে এসেছে। সরকার নেমে আসতে বাধ্য করেছে। আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে গিয়েছি এবং আগামিতে তা চালিয়ে যাব। বিরোধী দলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়তো কিছু মানুষকে তারা বন্দি করতে পারবে, জেলে নিতে পারবে, হয়তো তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে বিএনপির কোটি কোটি সদস্য ও কর্মী রয়েছে তাদেরকে ঘরছাড়া করতে পারবে। কিন্তু বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ যারা আজকে জেগে উঠেছে তাদেরকে এই সরকার কিছুতেই দমিয়ে রাখতে পারবে না। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জয় হবেই।

আরো পড়ুন : ৭ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার নামাজের সময়সূচি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *