পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করায় বাংলাদেশি পোশাক বেশি দামে কিনবে বিদেশি ক্রেতারা

অর্থনীতি আন্তর্জাতিক তথ্য-প্রযুক্তি প্রচ্ছদ লাইফ স্টাইল শিল্প প্রতিষ্ঠান হ্যালোআড্ডা

পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ক্রয়মূল্য বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এইচঅ্যান্ডএম ও গ্যাপের মতো আন্তর্জাতিক ফ্যাশন রিটেইলার।

হাজারের বেশি পোশাক ক্রেতাদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বখ্যাত সুইডিশ ফ্যাশন রিটেইলার ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম, গ্যাপসহ অন্য খুচরা বিক্রেতারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ক্রয়মূল্য বড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর ফলে পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে কারখানাগুলোর যে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, সেটা পূরণে এই বাড়তি মূল্য সহায়তা করবে।

বিশ্বে চীনের পর সবচেয়ে বড় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক হচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে পুলিশের সঙ্গে পোশাক কর্মীদের বিক্ষোভ-সহিংসতার পর বাংলাদেশের সরকার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা (১১৩ মার্কিন ডলার) করেছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাড়ানো পোশাক শ্রমিকদের নতুন এই মজুরি ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।

কারখানা মালিকরা বলেছেন, আগামী জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আগে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করায় তাদের মুনাফা হ্রাসের পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয়ও ৫ থেকে ৬ শতাংশ বাড়বে। তৈরি পোশাকের মোট উৎপাদন খরচের ১০ থেকে ১৩ শতাংশ শ্রমিকদের পেছনে ব্যয় হয় বলে এ খাতের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে।

এএএফএ-এর প্রধান নির্বাহী স্টিফেন লামারের কাছে জানতে চাওয়া হয়- উৎপাদন ব্যয় ৫ থেকে ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে ক্রয়মূল্য একই পরিমাণে বাড়াবেন কিনা? জবাবে রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই।’

স্টিফেন লামার বলেন, ‘আমরা এবং আমাদের সদস্যরা বেশ কয়েকবার বলেছি, মজুরি বৃদ্ধিকে সমর্থন জানানোর জন্য আমরা দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বার্ষিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা পদ্ধতি গ্রহণের জন্য আমরা বারবার আহ্বান জানিয়েছি, যাতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে সুবিধাবঞ্চিত না হন।’

সস্তা শ্রমই বাংলাদেশে পোশাকশিল্প গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে। এই শিল্পে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তিও তৈরি পোশাক খাত। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১৬ শতাংশ আসে এই খাত থেকে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, বাড়ানোর পরও বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি আঞ্চলিক তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশের তুলনায় কম থাকবে। বাংলাদেশের কিছু শ্রমিক বর্ধিত মজুরিকে একেবারে কম বলেছেন। ভিয়েতনামে একজন শ্রমিক মাসে গড়ে ২৭৫ মার্কিন ডলার এবং কম্বোডিয়ায় ২৭৫ মার্কিন ডলার পান, যা বাংলাদেশের বাড়ানো মজুরির (১১৩ ডলার) তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা পোশাক বিক্রেতা অ্যাবারক্রম্বি অ্যান্ড ফিচ ও লুলুলিমনসহ এএএফএ-এর বেশকিছু সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ করেছিল। আর এ বিষয়ে পোশাক ক্রেতাদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক সংগঠন এএএফএ-এর প্রধান নির্বাহী লামারও জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছিলেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

অঅরো পড়ুন : ২৮ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ৯২টি গাড়িতে আগুন ও ২০০টি গাড়ি ভাংচুর

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *