আজ আমরা একবিংশ শতাব্দীতে সভ্যতার এক সবুজ সামিয়ানার নিছে বসবাস করছি। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকা আমরা দেখিনি। আমরা শুনেছি শুধু মুরব্বিগণের মুখে মুখে।
এই দু’টি বিশ্বযুদ্বের ফলশ্রুতিতে গঠিত হয়েছিল জাতিসংঘের মত বিশ্ব নিয়ন্ত্রক এক অভিভাবক প্রতিষ্ঠান। আধুনিক বিশ্বে ঘটে যাওয়া যাবতীয় অনাচার-অত্যাচারের মোকাবেলা করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য অবশ্য দায়বদ্ধ তারা।
আমার জানা নেই বিগত ৭৮ বছরে তারা কতখানি দায়িত্ব পালন করে আসছে। আমার এই ছোট্ট জীবনে বসনিয়া হারজেগবিনা, চেচনিয়া, কাশ্মীর, চীনের উইঘুর, রোগিঙ্গা, ফিলিস্তিন এবং আফ্রিকার দেশে দেশে একতরফা কত অত্যাচার আর নিপীড়ন দেখা হল, তার হিসেব কষা বড়ই মুশকিল আজ।
সবসময় দেখেছি জাতিসংঘের নিরব ভূমিকাটি আমি। তারা গুটি কয়েক মোড়লদের কথা ছাড়া এক কদম সামনে চলে না। মাজলুমরা সবসময় মার খাচ্ছে আর তারা নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে। তাদের জন্য নির্ধরিত রয়েছে এত বড় বাজেট যা কল্পনা করা যায় না। আজ আমার মত বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের একটিই প্রশ্ন- তাহলে কি এই জাতিসংঘ নামক পুতুলটির প্রয়োজন আছে?
বর্তমান পেক্ষাপটের কথা বলে আমার এই লেখার সূচনা। জায়নবাদী ইহুদি জাতিটিকে কে না চেনে এই ধরার মানুষ। বৃটিশ পররাষ্ট্র সচিব কর্তৃক বেলফোর ডিক্লিয়াশন অনুযায়ী নভেম্বর ১৯১৭ সালে ইহুদিদের জন্য একটি জায়গার প্রয়োজন উল্লেখ করা হয়। আর সে জমির প্রস্তাব করা হয় ফিলিস্তিনের ভূমিকে।
তখন থেকেই তারা ফিলিস্তিনের মাটিতে আসতে শুরু করে। তখন হতে ভিক্ষুকের মতো এরা সেখানে গিয়ে একটু আশ্রয় খুঁজতে থাকে। তখন ফিলিস্তিনবাসীরা দয়া করে, মায়া করে তাদের ঘরের সাথে ঘর বানিয়ে থাকতে দিয়ে সাহায্য করে। কে জানতো একদিনের এই ইহুদি জায়নবাদীরা আজকের দখলদার বনে তাদেরই আশ্রয়দাতাদের তাড়িয়ে দিবে? দখল করে নিবে তাদের প্রিয় মাতৃভুমি।
শুনেছি তারা নাকি আগামীর জন্য একটি ছক তৈরি করেছে। তাতে কিভাবে পুরো ফিলিস্তিন, জর্ডান, সিরিয়া, লেবানন আর হেজায অঞ্চলসহ সমর্গ আরবের অর্ধেক দখল করা যায় সেটি।
আসমামি কিতাব আল-কুরআনে এদের হটকারীর কথা বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। শতশত নবী বা অবতারদের হত্যা করেছে এরা। নবী যাকারিয়াসহ আরো কত শতশত নবী রাসূলদের হত্যা করেছে এরা এর হিসেব কে দিবে।
রোমান সম্রাটদের মাধ্যমে কত তিরষ্কার আর বিচারের সম্মুখিন হয়েছে তাও ইতিহাস কিংবা কিংবদন্তীর পাতায় পাতায় লিপিবদ্ধ রয়েছে। এরা সেই অভিশপ্ত জাতি যাদেরকে ইউরোপের বুকে কেউ রাখতে চায় না। কেউ বিশ্বাসও করে না তাদের। এরা জাতি, দেশ আর সমাজের মাঝে ফাছাদ কিংবা ঝগড়া লাগাতে বড়ই পটু। তাইতো তাদেরকে গোটা ইউরোপবাসী দায়সাড়া হয়ে আরবের মাটিতে পৌছাতে সক্ষম হয়। আজকে এই জাতি গোটা আরবের বুকে যেনো এক বিষফোঁড়ার মত জেকে বসেছে।
এরা তাদের নবী মুসাকে (আ.) অসামান্য কষ্ট দিয়েছে। সবসময় নবী মূসাকে অনেক বিব্রতকর করে তুলতো সারাটি জীবনভর। এসব কথা পবিত্র আল-কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে বারবার।
তারা নবী মূসাকে শত্রুর বিরুদ্ধে মোকাবেলা করার সময় বলেছিলো, হে নবী তুমি আর তোমার প্রভু যাও শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। আমরা যেতে পারবো না। মহান আল্লাহ কতবার কতভাবে এদের শাস্তি দিয়েছেন তা তো বিশ্ববাসী সকলের জানা আছে।
এরা আসমানী খাবার খেতে অনিহা প্রকাশ করেছিল বিধায় আল্লাহ এদেরকে তীহ্ নামক খোলা ময়দানে চল্লিশ বছর জাযাবরের এক জীবন দিয়েছিলেন। ইতিহাসের চরম এক অশৃঙ্খল জাতির নাম ইহুদি। এরা দখলদারিত্ব ছাড়া, অন্যের অনিষ্ঠ করা ছাড়া আর কিছু বুঝে না।
যে কোন অপরাধ আর অনিষ্টতা এরা করতে পারে না এমন নজীর এদের মাঝে নাই। ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ লাগানো, একের বিরুদ্ধে অন্যকে ক্ষেপিয়ে তোলা এসব কাজ এদের দশ আঙুলের খেলা মাত্র।
আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলার সময় সাড়ে তিন হাজার ইহুদি কেনো সেখানে ঢুকেনি সেদিন? আর এই হামলার দোষ নিরীহ মুসলিমদের উপর চাপানো হয়েছিল- এ বিষয়টি কি বিবেকবানদের নিকট স্পষ্ট নয়?
অহেতুক মুসলিমদের বিরোদ্ধে বিশ্ব পরাশক্তিদের ক্ষেপিয়ে তুলে তাদের ধংসের নীল-নকশা করে এরা ঠিক নবী ইসা মসীহ এর আগমনের সময় যেমন করে রোমানদের ক্ষেপিয়ে তুলেছিলো। আজো তাই করছে বিরতিহীনভাবে।
এই ব্যাপারে ইউরোপের সকলের জানা আছে। তাইতো এদেরকে ইউরোপ ছাড়ার পরিকল্পনা তৈরী করা হয় বেলফোর চুক্তিটির মাধ্যমে।
ফিলিস্তিনবাসী আজ যে অত্যাচার নিপীড়ন দেখছে, তা গোটা বিশ্বের একশত নব্বই কোটি মুসলমানদের চরম আহত করছে। বড়ই ব্যথিত করছে তাদের। রক্তক্ষরণ হচ্ছে তাদের হৃৎপিন্ডে।
গোটা বিশ্বের মাত্র তিন কোটির কম ইহুদি জায়নবাদীদের অত্যাচারে দিনদিন ফুঁসে উঠছে বিশ্ব মুসলিমদের বিবেক। তাহলে শুধু অপেক্ষার পালাই বলবো নাকি বলবো সেই হাদিসটির কথা।
নবী করীম (সা.) এদের সম্বন্ধে যা বলে গেলেন সেই কথা। হ্যাঁ, আমাদের নবী করীম (সা.) বলেছেন- একদিন মুসলিম যুদ্ধাদের হাতে এরা সবাই মৃত্যু বরণ করবে। এরা মৃত্যুর পথ ধরে ছুটে যাবে। এরা একত্রিত হবে সবাই মিলে। তখন মুসলিম মুজাহিদরা এদেরকে খুঁজে বেড়াবে হন্যে হয়ে। এরা পাথর আর গাছের আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে থাকবে। পাথর এবং গাছ তখন কথা বলবে। বলবে- হে মুসলিম! চেয়ে দেখো, আমার পেছনে লুকিয়ে আছে ইহুদি। একে তুমি হত্যা করো।
আল-কুরআন ও হাদিসে এদের ব্যাপারেই শুধু কেন এসব কথা বলা হয়েছে তা আজকের প্রেক্ষাপটই আমাদের বলে দিচ্ছে। অন্য কোন জাতির ব্যাপারে এ সব কথা কেনো বলা হলো নাতো।
এডলফ হিটলার তাদেরকে চিনেছিলেন ভালোভাবেই। তিনি ৬ বছরে ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করেছিলেন। তিনি তার মৃত্যুর পূর্বে বলেছিলেন- আমি কিছু ইহুদি আজ বাঁচিয়ে রাখলাম। আমি কেন ইহুদি নিধন করেছিলাম তা একদিন বিশ্ববাসী বুঝতে পারবে।
হাদিসের ব্যাখ্যাটি কে কিভাবে করবেন আমি তা জানি না। আমি কোন ব্যাখ্যা দিতে চাই না।
তবু বলবো- আমরা শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনছি আজ। ফিলিস্তিনের বুকে আজকের জন্ম নেয়া শিশুরাই যারা এতিম হল আজ তারাই প্রতিশোধ নিবে। শেষ দেখাটির অপেক্ষার পালা শুধু আমাদের। উল্লেখিত হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী কবে আসবে সে দিনটি। তার প্রতিক্ষার প্রহর গুনছি আমরা আজ।
সুত্র- যুগান্তর
অোরো পড়ুন : ইনকিউবেটরে ৪৫ শিশু মৃত্যুর প্রতীক্ষায় থাকলেও আইসিইউ লক্ষ্য করে বোমা হামলা করছে ইসরাইল