সিলেটের হবিগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর ঘটনায় একজন চিকিৎসক ও হাসপাতাল মালিকসহ চারজনকে পুলিশে সোপর্দ করেছে হাইকোর্ট। চার আসামির করা আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে মঙ্গলবার এই আদেশ দেন বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশিরউল্লাহর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এ সময় আদালত বলেন, দায়িত্বে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় ইদানিং রোগীর মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। এ ধরনের অপরাধ করে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আদালত আরও বলেন, চিকিৎসা সেবার নামে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেবার পরিবর্তে তারা অর্থের পেছনে ছুটছেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর রহিমা আক্তার পেটে টিউমার নিয়ে চিকিৎসার জন্য সিলেটের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসেন। এ সময় রহিমার সঙ্গে আসা আত্মীয়-স্বজনকে ভুল বুঝিয়ে স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সেখান থেকে তাকে হবিগঞ্জের ‘দি জাপান বাংলাদেশ’ হাসপাতালে ভর্তি করেন আসামিরা।
পরে ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ গত ৯ সেপ্টেম্বর রোগীর অপারেশন করেন। তিন দিন পর তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়িতে যাওয়ার পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
এক পর্যায়ে ২ অক্টোবর হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন রহিমা। পরে সেখান থেকে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওসমানী মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানান, জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ টিউমার অপারেশনের সময় ভিকটিম রহিমার খাদ্যনালী, জরায়ু এবং বামপাশের কিডনিও কেটে ফেলেছেন। এমনকি টিউমারও যথাযথভাবে অপসারণ করা হয়নি।
পরবর্তীকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ অক্টোবর মারা যান রহিমা। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে মামলা করেন রহমত আলী।
পরে এ মামলায় হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ, দি জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলাম ও আমীর আবেদীন এবং ম্যানেজার জনি আহমেদ। হাইকোর্ট জামিন না দিয়ে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা তাদের আদালত থেকে নিজেদের হেফাজতে নেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন : ১৫ নভেম্বর ২০২৩, বুধবার নামাজের সময়সূচি