সোনালি আঁশেই নির্বাচন করবে তৃণমূল বিএনপি

জনপ্রতিনিধি পুরুষ প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। নিজের দলের প্রতীক সোনালি আঁশ নিয়েই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেব। আমার বিশ্বাস জনগণ আমাদের পাশে থাকবে। আমরা সরকারের সঙ্গে ফাইট দিতে পারব। গতকাল দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

তৈমূর আলম বলেন, তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার থিওরি হচ্ছে, সুষ্ঠু রাজনীতি-সুশাসনের ভিত্তি। বাংলাদেশে এখন সুশাসনের অভাব। জনগণ এটা চায়। এ কারণেই দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন দিক থেকে মানুষ তৃণমূল বিএনপির দিকে ছুটছে। এ কারণে আমাদের মনোনয়ন ফরম বিক্রির সময় বৃদ্ধি করতে হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তৈমূর আলম বলেন, আমরা বাংলাদেশের অনেক বড় বড় নেতার মতো নৌকা নিয়ে নির্বাচন করব না। আমরা নির্বাচন করব আমাদের প্রতীক সোনালি আঁশ নিয়েই। আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকান্ড দীর্ঘদিনের। জনগণ আমাদের সম্পর্কে জানে। আমার কর্মকান্ড সম্পর্কেও জানে। তিনি বলেন, সাবেক এমপি, আমলা, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমন অনেকেই আমাদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আওয়ামী লীগের জোট প্রসঙ্গে তৈমূর আলম বলেন, আমি কখনোই আমার কথা থেকে সরে আসিনি। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলে দিচ্ছি। বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি এবং আমাদের যে অবস্থা, তাতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো জোট করার সম্ভাবনা নেই। এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তৈমূর আলম বলেন, আমি বহুবার জেল খেটেছি, ডিটেনশন খেটেছি, গুলি খেয়েছি। আল্লাহকে বিশ্বাস করে আছি। চাপ বলতে কোনো শব্দ আমার কাছে নেই।

নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি এবার সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন না করে, তাহলে বাংলার জনগণ তাদের ভবনের ইট খুলে নিয়ে আসবে। কমিশনের কোনো পাত্তা থাকবে না। তাদের হুঁশিয়ার হয়ে যাওয়া উচিত। এক প্রশ্নের উত্তরে তৈমূর বলেন, বিএনপি আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করার পর আমি শুকরিয়া আদায় করেছি। তারা আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেয়নি। জনগণ জানে আমি সুস্থ ধারার রাজনীতি করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তৈমূর খন্দকার বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আপনি সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের অভিভাবক। সংবিধান অনুযায়ী সব ক্ষমতার মালিক আপনি। আপনার বিরুদ্ধে যে স্লোগান দেয়, তার জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বও আপনার। সংবিধান অনুযায়ী যেন প্রত্যক্ষ ভোট হয়, এটার দায়িত্বও আপনার। ফলে আপনি যে সুষ্ঠু নির্বাচন করার কমিটমেন্ট করছেন, এই কমিটমেন্টে অটুট থাকবেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, এবারের নির্বাচন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ও ফ্রি ফেয়ার হবে। কোনো প্রশাসনিক চাপ থাকবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে। এমপি-মন্ত্রীরা পুলিশ পেলে সব প্রার্থীই পুলিশি নিরাপত্তা পাবে। তাই আমরা প্রত্যাশা করি এবং বিশ্বাস করি, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপির কত আসনে জয়ী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তৈমূল আলম খন্দকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে কমিটমেন্ট করেছেন, তাতে আমাদের জয় নিশ্চিত। হয়তো ৭৫ বছর বয়সী আওয়ামী লীগের সঙ্গে এ বছর পেরে উঠতে পারব না, তবে আমরাই হব প্রধান বিরোধী দল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বয়স আমার চেয়ে এক বছর বেশি, তাই আওয়ামী লীগকে আমি ছোট করে দেখি না। আবার নিজেকেও আমি ছোট করে দেখি না। বিএনপিসহ যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, তাদের বিষয়ে তৈমূর আলম বলেন, আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন না করলে নেতৃত্বে ভাটা পড়ে। কর্মী ধরে রাখা যায় না। জনগণের কাছে যাওয়া যায় না। নির্বাচনটা জনগণের কাছে যাওয়ার একটা পদ্ধতি। জনগণের আস্থা অর্জন করার পদ্ধতি। আমি প্রধানমন্ত্রীকেও বলেছি, যারা নির্বাচনে যাচ্ছে না, তাদের যদি নির্বাচনে আনতে পারেন, তাহলে আন্তর্জাতিকভাবেও আপনার ইমেজ বৃদ্ধি পাবে। বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, আমি বিআরটিসির চেয়ারম্যান ছিলাম। যখন দেখতাম বিআরটিসির গাড়ি পোড়াচ্ছে, তখন আমার হার্টে লাগত। তাই গাড়ি পোড়ানোর নিন্দা জানাই। অন্যদিকে গণহারে গ্রেফতারের বিরোধিতা করি। আমি মনে করি, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জামিন দিলে যদি আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত হয়, তাহলে তার জামিন হওয়া উচিত।

আরো পড়ুন : প্রথম ম্যাচই যে বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচ হয়ে দাঁড়াবে এটা নিজেও ভাবিনি: অশ্বিন

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *