বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে হলে রাজত্ব করবে হিন্দি ছবি

তথ্য-প্রযুক্তি প্রচ্ছদ বিনোদন মুক্তমত সিনেমা হ্যালোআড্ডা

একের পর এক দেশীয় সিনেমা আটকে যাচ্ছে সেন্সর বোর্ডে। গত এক দশকে এ রকম অনেক ছবিই রয়েছে সেই তালিকায়। সম্প্রতি দেশি ছবি একাধিক কারণে আটকে দেয়া হয়েছে সেন্সর বোর্ডে। তবে তার বিপরীতে খুব সহজে ও অল্প সময়ে হিন্দি ছবি সেন্সর পেয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ভায়োলেন্স, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে নির্মিত ছবি কিংবা খোলামেলা দৃশ্যসহ নানা কারণে দেশের অনেক ছবি সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে। তবে এসব দৃশ্য সংবলিত হিন্দি ছবি সহজেই হলে প্রদর্শনের অনুমতি পেয়ে যাচ্ছে। চলতি বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে দেশের হলগুলোতে মুক্তি পেয়েছে বলিউডের ‘অ্যানিমেল’ ছবিটি। গতকাল মুক্তি পাওয়া ছবিটিই ডিসেম্বরে রাজত্ব করবে দেশের হলে। কারণ সিনেপ্লেক্স ও হলগুলোতে সর্বোচ্চ শো চলছে ছবিটির। অপরদিকে হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের ছবি মুক্তিও কমে গেছে।

রণবীর কাপুর ও রাশমিকা মান্দানা অভিনীত ‘অ্যানিমেল’ ছবিটি মূলত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। কিছু দৃশ্য কেটে সেন্সরে জমা হওয়ার পরই এটি সেন্সর পেয়ে যায় প্রদর্শনের।

ছবি মুক্তির বিষয়ে বোর্ডের সদস্য কাজী হায়াৎ বলেন, ‘অ্যানিমেল’ সিনেমার দুটি ভার্সন আমরা দেখেছি। এরপর আরব ভার্সন মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন বোর্ডের সদস্যরা। সেই ভার্সনে কোনো আপত্তিকর দৃশ্য নেই। তবে বিজয়ের মাসে এ ছবিটির মুক্তি নিয়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। একইভাবে এর আগে মুক্তি পেয়েছে বলিউডের ‘জাওয়ান’, ‘পাঠান’, ‘কিসি কা ভাই কিসি কা জান’ ছবিগুলো। এদিকে সম্প্রতি দেশের তরুণ পরিচালক সাজ্জাদ খানের ‘কাঠগোলাপ’ চলচ্চিত্র আটকে দেয়া হয়েছে সেন্সর বোর্ডে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসেও কথা বলেন তিনি। সাজ্জাদ বলেন, অদ্ভুত কারণে ‘কাঠগোলাপ’ সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে। বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সাহেব কি কারণে এটি আটকে রেখেছেন জানি না। তবে তিনি ঠিকই ‘অ্যানিমেল’ বুঝেছেন। আমার মনে হয় ‘অ্যানিমেল’ যদি দেশের কোনো পরিচালক বানাতেন সেটা এই ভাইস চেয়ারম্যান সাহেব কখনো মুক্তি দিতেন না। এটিকে ব্যান্ড করা হতো। বাংলাদেশে আড়াই ঘণ্টা মুক্তি পাবে, কিন্তু সেই সময়ে প্রচুর পরিমাণ ‘ভায়োলেন্স’ রয়েছে অ্যানিমেল-এ। আমি হয়তো ছবি আর বানাবো না। কারণ এভাবে ছবি হয় না। আমার ছবিতে দেশবিরোধী কোনো কিছু নেই। সেন্সরে আটকে যাওয়ার মতো কিছুই নেই। অনেক উৎসবে যাচ্ছে ছবিটি। কিন্তু নিজ দেশে দেখাতে পারছি না। এই পরিচালকের মতোই চাপা ক্ষোভ বয়ে বেড়াচ্ছেন দেশের অনেক পরিচালক-প্রযোজকরা। প্রায় সাড়ে ৪ বছর ধরে সেন্সরে আটকে রয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’। সিনেমাটি মুক্তির জন্য নির্মাতা অনেক দৌড়ঝাঁপ করলেও অনুমতি পাননি। তবে ছবিটি ভারতীয় প্ল্যাটফরম সনি লাইভে এরইমধ্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে। হলি আর্টিজানের নির্মম ঘটনার ছায়া অবলম্বনে ‘শনিবার বিকেল’ ছবিটি নির্মিত হয়েছে। এর আগে অনন্য মামুন পরিচালিত ‘মেকআপ’ চলচ্চিত্রটিও আটকে দেয়া হয় সেন্সর বোর্ডে। পরবর্তীতে সেটি ওটিটিতে মুক্তি পায়। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সেন্সরে আটক অনুদানের সিনেমা ‘নমুনা’। এর নির্মাতা এনামুল করিম নির্ঝর। ২০১৩ সালে সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ার ট্র্যাজেডি নিয়ে নির্মিত হয় ‘রানা প্লাজা’। নজরুল ইসলাম খান পরিচালিত সিনেমাটি এখন অবধি সেন্সরে আটকা। ২০১২ সালে অং রাখাইনের সিনেমা ‘মর থেঙ্গারি’ নির্মিত হয়। সেটিও এক যুগের বেশি আটক সেন্সর বোর্ডে। এর বাইরেও সেন্সরে আটকে আছে ‘হরিবোল’, ‘বাংলার ফাটাকেষ্ট’, ‘ধাবমান’সহ আরও কয়েকটি সিনেমা।

আরো পড়ুন : ইইউ এর ২৭টি দেশে নিট পোশাক রপ্তানিতে চীনকে ছাড়ালো বাংলাদেশ

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *