মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপুকে হত্যার সময় একই গাড়িতে ছিলেন তাঁর বন্ধু মিজানুর রহমান। পুরো ঘটনাটি তিনি দেখেছেন। মিজানুর বলছেন, পুরো ঘটনাটি ঘটেছে মাত্র এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় যানজটে আটকে ছিল জাহিদুলের মাইক্রোবাস। সে সময় মুখোশধারী (কেউ বলছেন হেলমেট পরা) দুই দুর্বৃত্ত এসে জাহিদুলের মাইক্রোবাস লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। মাইক্রোবাসের কাচ ভেঙে জাহিদুলের শরীরে একাধিক গুলি লাগে। চালক মুন্নাও গুলিবিদ্ধ হন। একই ঘটনায় যানজটে আটকা পড়ে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন ওরফে প্রীতি (২২) গুলিবিদ্ধ হন।
ওই গাড়িতে সে সময় চারজন ছিলেন। তাঁদের মধ্যেই একজন মিজানুর। আজ শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে মিজানুর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, গাড়িটি ঘটনাস্থলে আসা মাত্রই হঠাৎ জাহিদুলকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে এক যুবক। এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যান তিনি। এই পুরো ঘটনা ঘটেছে মাত্র এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে। জাহিদুলকে কেউ হুমকি দিয়েছিল কি না তা তাঁদের কাছে বলেননি।
জাহিদুল মিল্কি হত্যামামলার আসামি ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই মামলার কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না জানতে চাইলে মিজানুর বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য তদন্ত করে সেটা বলতে পারবে।
পুলিশ জানায়, জাহিদুল ইসলাম যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক মিল্কী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে অনেক দিন কারাগারে ছিলেন তিনি। পরে জামিনে মুক্ত হন। ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ড নামের একটি বিপণিবিতানের সামনে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মিল্কীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
জাহিদুলের বাসা খিলগাঁওয়ের বাগিচা এলাকায়। মতিঝিল এলাকার আধিপত্য বিস্তার এবং ফুটপাতে দোকান বসিয়ে বাণিজ্য করা নিয়ে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল বলে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
র্যাব আজ এক ব্রিফিংয়ে বলেছে, জাহিদুল হত্যার ঘটনায় বেশ কিছু আলামত ও তথ্য তারা পেয়েছে।
দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান জামালের (২২) বাসা শান্তিবাগ।