নিজস্ব প্রতিবেদক : অক্টোবর থেকেই ভয়াবহ বায়ুদূষণের কবলে রয়েছে ঢাকাবাসী। গতকাল সন্ধ্যায়ও ঢাকার বাতাস ছিল বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত। পুরো জানুয়ারিতে এক দিনও নির্মল বাতাস পায়নি এই শহরের বাসিন্দারা। নতুন বছরের প্রথম মাসে রাজধানীর বাতাস ছয় দিন ছিল অস্বাস্থ্যকর, ২৪ দিন ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর ও এক দিন ছিল বিপজ্জনক মাত্রায় দূষিত। জানুয়ারিতে ঢাকার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর উপাদান পিএম-২.৫ এর গড় ছিল ১৮৫.৩৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া নিরাপদ সীমার চেয়ে ৩৭ গুণ বেশি।
গতকাল সন্ধ্যায় বায়ুমান সূচকে (একিউআই) ঢাকার স্কোর ছিল ১৯১। দূষণে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ঘানার আক্রা শহরের স্কোর ছিল ১৮৮। ১৮৬ স্কোর নিয়ে দূষণে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ভারতের কলকাতা। জানুয়ারিতে ঢাকা শহর সবচেয়ে কম দূষিত ছিল ১৩ জানুয়ারি। ওই দিনও প্রতি ঘণমিটার বাতাসে ক্ষতিকর পিএম-২.৫ ছিল ১৩৫.৫ মাইক্রোগ্রাম, যা নিরাপদ সীমার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি।
আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে শুধু বায়ুদূষণের কারণে মানুষের গড় আয়ু সাত বছর কমে যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, বায়ুদূষণের কারণে হাঁচি, কাশি, সর্দি, শ্বাসের টান বা হাঁপানি, অ্যালার্জিক কফ, অ্যালার্জিক অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, ফুসফুস ক্যান্সারের মতো রোগগুলো হয়। বায়ুতে ভাসমান ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম ২.৫) শ্বাসতন্ত্র দিয়ে রক্তস্রোতে মিশে গিয়ে লিভার, কিডনিসহ বিপাক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। ফলে কিডনি বিকল, লিভার বিকলসহ নানা জাতীয় ক্যান্সার বাড়ছে।
নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, বায়ুর মানের কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যক্ষতি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক বেশি। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে বিষয়টিকে আমলে নেওয়া হচ্ছে না। দূষণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো পুরোপুরি অকার্যকর। দূষণ বন্ধে কঠোর আইন থাকলেও বাস্তবায়ন নেই।
আরো পড়ুন : অ্যাপের ফাঁদে দেড় হাজার গ্রাহকের ২০০ কোটি টাকা চীনে পাচার