রাজধানীর খুচরা বাজারে সাত দিনের ব্যবধানে আট পণ্যের দাম কমেছে। পণ্যগুলো হচ্ছে, আলু, পেঁয়াজ, খোলা সয়াবিন তেল, ডিম, ব্রয়লার মুরগি, আদা, জিরা ও লবঙ্গ। তবে এই সময়ের মধ্যে বেড়েছে চাল ও চিনির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি চাল ২-৪ টাকা ও চিনি ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদিন মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫২-৫৬ টাকা। যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৪ টাকা। মাঝারি আকারের চালের মধ্যে পাইজাম ও বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৬২ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও ৫৪-৫৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সরু চালের মধ্যে প্রতিকেজি মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৮০ টাকা। যা সাত দিন আগে ৬২-৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক খুচরা পণ্যমূল্য তালিকায় ও চালের মূল্য বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে। সংস্থাটি বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি সরু চাল ১.৪৫ শতাংশ, মাঝারি চাল ২.৬৮ শতাংশ ও মোটা চাল কেজিপ্রতি ২.৮৮ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের দাম বাড়লেও বাজারে এই পণ্যের কোনো সংকট নেই। রাজধানীর পাইকারি আড়ত থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায়ের প্রত্যেকটি দোকানে সরবরাহ ছিল পর্যাপ্ত। প্রত্যেকটি দোকানে থরে থরে রাখা আছে বস্তা। কিন্তু দাম বেশি। রাজধানীর কাওরান বাজারে চাল কিনতে আসা মো. শাকিল বলেন, এখন চালের দাম কেন বাড়ল তা বুঝতে পারছি না। কোনো দোকানে চালের কোনো সংকট নেই। দেশে পরিবহণ চলাচল স্বাভাবিক আছে। আগে রাস্তায় চাঁদাবাজি থাকলেও এখন নেই। তারপরও বিক্রেতারা বাড়তি দরে চাল বিক্রি করছে।
চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে একই বাজারের আলাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাজারে চালের কোনো সংকট নেই এটা সত্য। তবে মিল পর্যায় থেকে দাম বাড়ানোর কারণে পাইকারি বাজারে চালের দাম বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা পর্যায়ে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ভোক্তাদের বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। তিনি জানান, মিল পর্যায়ে চালের দাম কমানো হলে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম কমে আসবে।
চালের পাশাপাশি চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা। যা সাত দিন আগে প্রতিকেজি সর্বনিæ ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮১০ টাকা। যা সপ্তাহখানেক আগেও ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
অন্যদিকে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা। যা সাত দিন আগে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে সর্বনিæ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খোলা সয়াবিন তেল প্রতিলিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫২ টাকা। যা আগে ১৫৫ টাকা ছিল। প্রতিকেজি আমদানি করা আদা মানভেদে ২০০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সাত দিন আগে ২৪০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা। যা সপ্তাহখানেক আগে ৮৫০ টাকা ছিল। লবঙ্গ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫০ টাকা, যা আগে ১৭৫০ টাকা ছিল।
এদিকে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক সপ্তাহ আগেও ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি। যা আগে ৭০০ টাকা ছিল। পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি হালি ফার্মের ডিম ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাড়া-মহলার মুদি দোকানে হালিপ্রতি ২ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা সাত দিন আগেও ৫০-৫৫ টাকা ছিল।
আরো পড়ুন : গোমস্তাপুরে ১৫ আগষ্ট পালিত