স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুরে প্রায় ৩ কোটি টাকা দামের দেড় একর জমির নামজারি প্রকৃত মালিকদের নামে না দিয়ে অবৈধ সুবিধাবাদী চক্রের নামে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভূমি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ৪৮টি পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ন্যায়বিচার ও প্রতিকার পাওয়ার জন্য গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন : সাবেক এসপি আর এমপি’র প্রভাবে গাজীপুর ও কালীগঞ্জের দুই পদ নিয়ে বেপরোয়া শাহনাজ
নগরের কাশিমপুরের বানু বেগম ও তার স্বজনদের অভিযোগে জানা গেছে, কাশিমপুর থানাধীন গোবিন্দবাড়ি মৌজার ৩৪৯ নম্বর খতিয়ানে ৯টি দাগে তিনি এবং তাদের পৈতৃক পরিবারের লোকজন বর্তমানে ৪৮ পরিবারের সদস্যরা নিজেদের মালিকানাধীন জমি ভূমি অফিস থেকে নাম জারি করতে দীর্ঘ ৯ বছর যাবৎ ব্যর্থ হচ্ছেন। তাদের দাবিকৃত নির্ধারিত জোতে জমির পরিমাণ নেই, এমন অজুহাত দেখিয়ে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলেছেন। এসব অভিযোগ সহকারী কমিশনার (ভূমি) টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল এবং কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এ ছাড়াও অভিযোগ তোলা হয়েছে, বিজ্ঞ যুগ্ম অতিরিক্ত জজ আদালতের একটি দেওয়ানি মোকদ্দমার আদেশ বিকৃতি করে, বানু বেগম গং ৭৫ শতাংশ রেকর্ডীয় জমির বৈধ মালিক হওয়া সত্ত্বেও রেকর্ডীয় প্রজা তার বাবা মৃত মেঘু মিয়া ও ইসমাইলের ৬৮ শতাংশ জমির বৈধ খারিজ বণ্টননামা দলিল ছাড়া বাতিল করেন।
অন্যদিকে, একই এলাকার মৃত নায়েব আলীর ওয়ারিশগণ (অর্থাৎ মজিবর শেখ, মান্নান শেখ, হান্নান শেখ, সাহারা বেগম, ফারুক হোসেন এবং খলিলুর রহমান)কে মালিকানার চেয়ে ৫৫ শতাংশ বেশি জমি খারিজ বা নাম জারি প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও এলাকার মৃত কছিম উদ্দিনের ওয়ারিশগণ (হযরত, ওসমান, সিদ্দিক, হাসনা বেগম ও বিমলা খাতুন)কে অনিয়ম করে অবৈধভাবে ৩৫ শতাংশ জমির নামজারি চলতি বছরে দিয়েছেন তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল এবং কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত লোকজন যেখানে দখলে রয়েছেন, সেখানে ছাড়া খারিজ করেছেন অন্য জায়গায়। তাছাড়া প্রকৃত রেকর্ডীয় বৈধ জমির মালিককে জোতে জমি না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বারবার নামজারির আবেদন বাতিল এবং আর এস দাগের সঠিক তথ্য প্রদানে অপারগতা, হয়রানিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বিগত ২৭শে সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী বানু বেগম ১১৪৮৬ নং জোত এর সহি মুহরি নকলের জন্য গাজীপুর রেকর্ড রুম বরাবর আবেদন করলে অদৃশ্য কারণে সঠিক তথ্য প্রদান করা হয়নি। অভিযোগকারী ও তাদের শরিক পরিবারের লোকজন অনিয়মের এসব বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ন্যায়বিচারের আবেদন জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন : আওয়ামী লীগের অন্যায়ের অনুশোচনা আর আত্মোপলব্ধি নিয়ে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিবাদী পক্ষ হযরত আলী ও সিদ্দিক মিয়া জানান, তারা তাদের মালিকানাধীন জমির চেয়ে বেশি অংশ খারিজ করেননি। এছাড়া এ বিষয়ে অভিযোগকারী বানু বেগম গং সরকারি কমিশনার (ভূমি)-এর আদালতে বাতিলের মোকদ্দমা করেছেন। সেখানেই এ বিষয়ে ফয়সালা হবে। অভিযোগের বিষয়ে ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ জানান, প্রকৃত মালিকানা ছাড়া কাউকেই জমির খারিজ দেয়া হয়নি। এছাড়া অন্য কোনো ধরনের অনিয়মের সঙ্গেও কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের কেউ জড়িত নন।
আরো পড়ুন : ঘুষের সিন্ডিকেট করে চার কাস্টমস কর্মকর্তার অঢেল সম্পদ