এবার জীবাণু অস্ত্রে বিনিয়োগ করছেন বাইডেনপুত্র

আন্তর্জাতিক জনদুর্ভোগ প্রচ্ছদ

যুক্তরাষ্ট্রের জীবাণু বা রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে রাশিয়াসহ অন্যদের অভিযোগ অনেক পুরোনো। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে মস্কো দাবি করে আসছে, ইউক্রেনে পেন্টাগনের সহায়তায় জীবাণু অস্ত্রের কর্মসূচি চলছে। এবার সরাসরি প্রমাণ পাওয়ার জোরালো অভিযোগ করেছে ক্রেমলিন।

এ অভিযোগের তীর খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের দিকে। তার বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান রোজমেন্ট সেনেকা জীবাণু অস্ত্র তৈরির প্রকল্পে ২৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে বলে দাবি রাশিয়ার। এ অভিযোগকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে ওয়াশিংটন ও কিয়েভ। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল বলছে, এ সংক্রান্ত গবেষণায় হান্টার ও তার প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন পাঁচ লাখ ডলার।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে শুক্রবার সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, বাইডেনপুত্র হান্টার ইউক্রেনের জীবাণু অস্ত্র গবেষণাগারগুলোতে বিপজ্জনক জীবাণুর সামরিক গবেষণায় অর্থায়নে জড়িত ছিলেন। তিনি মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের এ সংক্রান্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেটাবায়োটার মাধ্যমে ২৪০ কোটি ডলার অর্থায়ন করেছিলেন।

ডেইলি মেইল হান্টারের ল্যাপটপ থেকে পাওয়া ই-মেইল এবং চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, হান্টার ও তার রোজমন্ট সেনেকা ওই গবেষণায় পাঁচ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছেন। তারা বলছে, মহামারি ছড়িয়ে দেওয়া রোগ নিয়ে গবেষণায় মেটাবায়োটায় কয়েক লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল দিয়েছেন হান্টার। এই গবেষণা জৈব অস্ত্র উৎপাদনেও ব্যবহার সম্ভব। রাশিয়ার পরমাণু, জৈব ও রাসায়নিক সুরক্ষা বাহিনীর প্রধান অভিযোগ করেন, মার্কিন সরকার ও ইউক্রেনের জৈব প্রকল্পের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। ফাঁস হওয়া একটি নথিতে দেখা গেছে, এক কর্মকর্তার সঙ্গে ২০১৪ সালে হান্টার ইউক্রেন নিয়ে কথা বলেছেন। কীভাবে রাশিয়া থেকে ইউক্রেনের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের জীবাণু অস্ত্র নিয়ে বহু অভিযোগ রয়েছে।

এমনকি রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ইউক্রেনেও তাদের জীবাণু অস্ত্রের গবেষণাগার আছে বলে বহুদিন থেকে দাবি করে আসছে মস্কো। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রকাশ্যে আসে। চলতি মাসের প্রথম দিকে দেশটিতে হামলার পর দখল অঞ্চলে এর প্রমাণ পাওয়ার দাবি করে রুশ বাহিনী। সে সময় এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে চলছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি সভা হয়। তাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনসহ পশ্চিমারা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খুঁজে পায়। চীন বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আহ্বান জানালেও এড়িয়ে যায় ওয়াশিংটন।

সে সময়ে রয়টার্স জানায়, ইউক্রেনের গবেষণাগারগুলোতে সংরক্ষিত উচ্চ ঝুঁকির প্যাথোজেন বা জীবাণুগুলো ধ্বংস করে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির জৈব সুরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেন, সামরিক অভিযান এবং শহরগুলোতে গোলাবর্ষণের ফলে ওইসব পরীক্ষাগার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখান থেকে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এগুলোর কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ডব্লিউএইচও। তবে ওইসব গবেষণাগারে কী ধরনের জীবাণু বা রাসায়নিক রয়েছে- সে সম্পর্কে রয়টার্সের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি সংস্থাটি। সে সময় জাতিসংঘও এ বিষয়ে অবগত নয় বলে জানায়।

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *