বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করায় নানা আলোচনা চলছে। এবার বিষয়টি উঠে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
ব্রিফিংয়ে জানতে চাওয়া হয়, অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) ব্যুরো চিফসহ সম্প্রতি বাংলাদেশে ১৮৪ সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে? সম্প্রতি সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
জবাবে দপ্তরের প্রধান উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, বিষয়টি আমি এখনো দেখিনি। যদি এমনটি হয় তবে তা দুঃখজনক। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো বাংলাদেশসহ যে কোনো দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অত্যাবশ্যক। প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সাংবাদিকদের অধিকার এবং স্বাধীনতা যথাযথভাবে সম্মান করার বিষয়টি উৎসাহিত করব এবং এটি নিশ্চিত করতে চাই।
এর আগে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। সোমবার (১১ নভেম্বর) ই-মেইলে পাঠানো এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সিপিজের সিইও জোডি গিনসবার্গ।
সিপিজের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত চিঠিতে বলা হয়, গত ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ২০০৩ সালে পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের যে ঘোষণা দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানানো হয়। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করে সিপিজের সিইও বাংলাদেশের সংবিধান এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদে যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে, সেগুলো রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বাধ্যবাধকতাকে ক্ষুণ্ন করে, এমন সব আইন অবিলম্বে স্থগিত করারও আহ্বান জানানো হয়।
সিপিজে আরও বলছে, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের কাজের জন্য তাদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারে সরকারকে সহায়তা করতে হবে। বিশেষ করে কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগ সমর্থক চার সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তের ক্ষেত্রে যেন যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়; তারা যেন সুষ্ঠু বিচার পান– তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের অফিসে হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর দ্রুত, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর আইনবহির্ভূতভাবে সাংবাদিকদের ওপর নজরদারি ও হয়রানির ঘটনার অবসান চেয়েছে সিপিজে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমন্বিত সাংবাদিক সুরক্ষা আইন করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আইনটি এমন হবে, যাতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনভাবে ও নিরাপদে সংবাদ প্রকাশের অধিকার রক্ষিত হবে।
অঅরো পড়ুন : ফজলুল হক মিলনের সুপারিশের কারণে গাজীপুর সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগে বৈষম্য