‘অবৈধ সম্পর্কের জেরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শিল্পপতিকে জবাই করেন প্রেমিকা: পুলিশ

আইন-আদালত ক্রাইম নিউজ পুরুষ প্রচ্ছদ মনোকথা হ্যালোআড্ডা

‘অবৈধ সম্পর্কের জেরে শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুমকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে জবাই করে হত্যা করেন পরকীয়া প্রেমিকা রুমা। এরপর তিনি গুম করার উদ্দেশে লাশ টুকরা টুকরা করে ব্যাগে ভরে সিএনজিতে করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেন’- পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন রুমা।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, রূপগঞ্জের পূর্বাচলে জসিম উদ্দিন মাসুমের (৬২) সাত টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে গুলশান থানায় একটি জিডির সূত্র ধরে লাশের পরিচয় জানতে পারি। হত্যাকাণ্ডে ভুক্তভোগী হলেন ফতুল্লার চাঁদ ডাইংয়ের মালিক শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুম। তিনি বিবাহিত এবং তার সংসারে সন্তানও রয়েছে।

এসপি বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মোসা. রুমা আক্তারকে (২৮) রাজধানীর শেওড়াপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আসামির দেখানো স্থান থেকে একটি চাপাতি, হ্যাক্সে ব্লেড, ভুক্তভোগীর পরিহিত সাফারি, একজোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়।

প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুমা জানান, রুমার সঙ্গে শিল্পপতি মাসুমের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু তার পাশাপাশি শিল্পপতি মাসুম অন্য আরেক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। বিষয়টি জানতে পেরে রুমা রাগে, ক্ষোভে তাকে খুন করেন।’

রুমার জবানবন্দির বরাতে পুলিশ সুপার জানান, গত ১০ নভেম্বর রাতে রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মূলত সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে তারা একত্রিত হতেন। প্রথমে ব্যবসায়ী মাসুমকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়। এরপর চাপাতি দিয়ে তাকে জবাই করে লাশ টুকরো টুকরো করা হয়। সেই টুকরো টুকরো অংশ বিভিন্ন স্থানে ফেলেন।

গ্রেপ্তার রুমা আক্তার ময়মনসিংহ গৌরিপুর থানার তারাকান্দা এলাকার নজর আলীর মেয়ে।

এসপি আরও জানান, এ ঘটনায় আরও দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা এ ঘটনায় জড়িত কিনা তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে নিহতের বড় ছেলে ওবায়দুল ইসলাম শিবু তার বাবার হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনান দাবি জানান। তিনি বলেন, আমার বাবাকে হত্যার পর শরীর যেভাবে টুকরা টুকরা করে ফেলা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।

এর আগে বুধবার দুপুরে কুড়িল-কাঞ্চন সড়কের উত্তর পাশে পূর্বাচলের ৫ নম্বর সেক্টর থেকে তিনটি পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো লাশের খন্ডাংশগুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানান রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে কাঞ্চন-কুড়িল সড়কের পাশে লেকের পানিতে হাত ধোয়ার সময় দুর্গন্ধ পান স্থানীয় এক রিকশাচালক। পরে তিনি আরও কয়েকজনকে ডাক দেন। তারা পলিথিনে মোড়ানো ব্যাগগুলো দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে কালো রঙের তিনটি পৃথক পলিথিন ব্যাগে মরদেহের খন্ডাংশগুলো উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরে নিহতের ছেলে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে বাবার লাশ শনাক্ত করেন।

আরো পড়ুন : বিরামপুরে অনুর্ধ্ব-১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *