গোবিন্দগঞ্জে নিখোঁজের ৪ দিন পর নদীতে ভেসে উঠল এক শিশুর লাশ
গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার ৪ দিন পর নদীতে ভেসে উঠলে মাহিম বাবু নামে ৬ বছরের এক শিশুর লাশ।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের খুকশিয়া গ্রামের মাজেদুল ইসলামের ছেলে মাহিম বাবু গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকজন আত্মীয়-স্বজনের বাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও মাহিমের কোন সন্ধান না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে রবিবার বিকেলে আনুমানিক ৪টার দিকে বাড়ীর পাশ্ববর্তী নলেয়া নদীতে একটি শিশুর মরদেহ ভেসে ওঠে। স্থানীয় লোকজন লাশটি দেখে হৈ-চৈ শুরু করলে মাহিমের পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে লাশটি মাহিমের বলে শনাক্ত করে। খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বুলবুল ইসলাম একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বুলবুল ইসলাম বলেন, পানিতে পড়ে শিশু মাহিমের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সাবেক পৌর মেয়র ও সন্ত্রাসী সুমনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃগাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌর সভার সাবেক মেয়র জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মুকিতুর রহমান রাফি, উপজেলা ওলামালীগের সভাপতি হোসাইন আহম্মেদ ও মোস্তফা কামাল সুমনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তানভীর নামে এক যুবক এ মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল তানভীর মোটরসাইকেল যোগে তার পৌর শহরের বাসায় যাওয়ার পথে গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের মেইন গেটের নিকট পৌঁছুলে মিন্টু শেখ, মোস্তফা কামাল সুমন ও জহুরুল ইসলাম সবুজসহ ২০/২৫ জনের একদল সস্ত্রাসী আওয়ামীলীগ নেতা মুকিতুর রহমান রাফির নির্দেশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তানভীরের ওপর আক্রমণ চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা তানভীরকে ছুড়িকাঘাতসহ বেদম মারপিট করলে সে গুরুতর আহত হয়। তানভীরকে রক্ষার জন্য রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তি সেখানে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকেও হকিস্টিক দিয়ে মারপিট করে তার পা ভেঙ্গে দেয়। পরে সন্ত্রাসীরা তানভীরের মোটরসাইকেলটিও সেখান থেকে নিয়ে যায়। স্থানীয় লেকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তানভীরকে সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। কিন্তু সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরবর্তীতে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তার করা হয়। অপর আহত রহুল আমিনকে বগুড়া সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন চিকিৎসা গ্রহণ করেন। মামলার বাদী তানভীর জানান, তার পিতা ভিন্ন রাজনীতির মতাদর্শের হওয়ায় তৎকালীন ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসররা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর আক্রমণ চালায়। ওই সময় থানায় মামলা দায়েরের চেষ্টা করা হলেও রাজনৈতিক প্রভাবে থানা মামলা গ্রহণ করেনি বলেও তিনি জানান। গত ৫ আগস্ট অবৈধ সরকারের পতনের পর দেশে বৈষম্য কাটিয়ে গেলে তিনি গত ১১ নভেম্বর তারিখে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ বুলবুল ইসলাম মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, মামলার ২ নং আসামী সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল সুমন মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকসহ প্রেস ক্লাবকে নিয়ে নানা ধরণের অশালীন মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়েছে। প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক বিএসসি আতিকুর রহমান আতিক স্বাক্ষরিত প্রতিবাদ লিপিতে জানানো হয়, ওই মামলার সাথে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তো দূরের কথা- প্রেসক্লাবের অন্য কোন সদস্যেরও কোন ইন্ধন বা বিন্দু মাত্র কোন সম্পর্ক নেই। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য মোস্তফা কামাল সুমন প্রেস ক্লাবকে টেনে আবোল- তাবোল ও আপত্তিকর কথা লিখছে। অপর দিকে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নুরুন নবী প্রধানকে নিয়ে সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল সুমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব মিথ্যাচার করেছে তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন মুহাম্মদ নুরুন নবী প্রধান। পৌর শহরের তবিবুর রহমান নামে এক রাজনৈতিক নেতা জানিয়েছেন, মোস্তফা কামাল সুমন একজন ইচরে পাকা ছেলে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় সে নিজেকে আওয়মীলীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতো। সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ও আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ হোসেন ফকু তার রাজনৈতিক গুরু- একথা তার ফেরবুক স্ট্যাটাসে একাধিকবার তার নিজের লেখায় উঠে এসেছে। ২০১৪ সাল থেকে জামায়াত- বিএনপি নিধনে আবুল কালাম আজাদ ও মুকিতুর রহমান রাফির সঙ্গে এক সাথে কাজ করেছে সুমন। পৌর শহরের মহিমাগঞ্জ রোডস্থ চারমাথায় সুমনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ছিল জামায়াত- বিএনপি’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সুতিকাগার। সুমনের বন্ধু সোহাগ জানিয়েছেন, সারা জীবন আওয়ামীলীগের সাথে অপকর্ম করে এসে মামলার আসামী হয়ে সে এখন সমাজের জনপ্রিয় ও প্রতিষ্টিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আবোল- তাবোল বকছে। কিন্তু তার এ ধরণের কর্মকান্ড কোন দিনই হালে পানি পাবেনা। সাধারণ মানুষের দাবী ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর সমাজে বিশৃংলকারী সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল সুমনসহ মামলার সকল আসামীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।
শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ ভাইরালের ঘটনায় যুবলীগ নেতা মুরগী জাহাঙ্গীর গ্রেফতার
গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ ও বিএনপি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগের মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মুরগী জাহাঙ্গীর আলমকে (৫০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে পৌর শহরের কুঠিবাড়ী এলাকার মোজাম্মেল হক মোজামের ছেলে।
গোবিন্দগঞ্জ পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমসহ তার সহযোগীরা মিলে গত ৩ আগষ্ট গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বিএনপি অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ ঘটনার পর থেকে তিনি ও তার লোকজন আত্মগোপনে চলে যান। এরপর জাহাঙ্গীর আলম গোপনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। সেই ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের নজরে আসে।
এসব অভিযোগে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার সকালে নওগাঁ জেলার মান্দা এলাকা থেকে জাহঙ্গীরকে গ্রেফতার করে শনিবার গোবিন্দগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বুলবুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা রয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রক্ষা করে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ফারুক হোসেন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আরো পড়ুন : ১৮ নভেম্বর, আজকের দিনে জন্ম-মৃত্যুসহ যত